এম.এইচ মুরাদঃ
বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে কমবয়সী প্রফেসর হিসেবে খ্যাতি অর্জনকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক সুবর্ণ আইজ্যাক বারী। গণিত, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞানে নিজ দক্ষতার পাশাপাশি তার লেখা ‘দি লাভ’ গ্রন্থ এবং সন্ত্রাসবিরোধী ক্যাম্পেইনের কারণে পরিচিতি পায় সে। অনেকের প্রত্যাশা সে বড় হয়ে গড়বে নতুন ইতিহাস।
বিশ্বের ইতিহাসে বিজ্ঞানী স্যার আইজ্যাক নিউটনই সবথেকে কম বয়সী প্রফেসর ছিলেন। সে বিবেচনায় তার নামের সাথে উপাধি যুক্ত হয় ‘আইজ্যাক’। শুধু তাই নয়, তার মেধা আর দক্ষতা দেখে অনেকেরই মাথায় আসে অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের কথা। তাদের অনুসারী সুবর্ণ বুদ্ধিতে সমসাময়িকদের চেয়ে রয়েছেন যোজন যোজন এগিয়ে। তাই তাকে এই যুগের আইনস্টাইনও বলছেন অনেকে।
সুবর্ণ আইজাকের এই বিস্ময়কর প্রতিভার কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নজর কাড়ে গোটা বিশ্বের। নজরে আসে হোয়াইট হাউসেরও। এই বিস্ময় বালকের প্রতিভা যাচাইয়ের জন্য নেওয়া হয় একের পর এক পরীক্ষা। যুক্তরাষ্ট্রের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিত বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের মুখোমুখি হয় সুবর্ণ। কোনো জটিল পরীক্ষাই আটকাতে পারেনি এই খুদে বিজ্ঞানীকে। তার সাক্ষাৎকার নেয় নামকরা গণমাধ্যমও।
সুবর্ণকে ‘আমাদের সময়ের আইনস্টাইন’ আখ্যা দিয়েছেন দ্য সিটি কলেজ অব নিউ ইয়র্কের প্রেসিডেন্ট লিসা এস কোইকো। তিনি গণিত, রসায়ন ও পদার্থবিজ্ঞান সংক্রান্ত নানা প্রশ্ন করলে সুবর্ণ সব সঠিক উত্তর দেয়ায় বিস্মিত লিসা জানান, ‘সে বড় হয়ে নতুন ইতিহাস গড়বে।’
বিখ্যাত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৮ সালে তাকে বিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ২০২০ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তাকে অধ্যাপক ঘোষণা করে। ভারতের মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়েও ভিসিটিং প্রফেসর করা হয় সুবর্ণকে। এরপর নোবেল জয়ী কৈলাস সত্যার্থী তাকে ‘চাইল্ড প্রডিজি’ অর্থাৎ, ‘বিস্ময় বালক’ পুরস্কারে ভূষিত করে।
গণিত এবং পদার্থবিদ্যায় দক্ষতা প্রদর্শনের সঙ্গে সঙ্গে সে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচারে নিজেকে যুক্ত করেছে। ‘দ্য লাভ’ নামে একটি বই লেখেন সুবর্ণ, যার বিষয় হল, সন্ত্রাসবাদবিরোধী বিশ্ব গঠনে এক মুসলিম শিশুর সংগ্রাম। ২০১৬ সালে তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামাও তাকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি রাশীদুল বারী-শাহেদা দম্পতির দ্বিতীয় সন্তান সুবর্ণ। ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল চট্টগ্রামের মেয়ে শাহেদার কোল আলো করে নিউইয়র্কে জন্ম নেয় সে। একই জেলার বাবা রাশীদুল বারী নিউ ইয়র্কের ব্রোনক্স কলেজের গণিতের অধ্যাপক। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে পিএইচডি করেন তিনি। মা শাহেদাও রয়েছেন শিক্ষকতা পেশায়। বাংলা ভাষাভাষীর সবার আশা ও প্রত্যাশা বর্তমানের মতো আগামীতেও আমাদের এই ছোট্ট সুবর্ণ তার অদম্য মেধা দিয়ে বিশ্বের দরবারে এদেশকে নিয়ে যাবে আরও অনন্য উচ্চতায়।