মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মিয়ানমারকে বিশ্বাস করার কোন কারণ নেই!! অভ্যন্তরীণ সংঘাত বন্ধে ধর্ষণ-গণহত্যাই কি সমাধান, প্রশ্ন গাম্বিয়ার


প্রকাশের সময় :১৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১:৩৬ : অপরাহ্ণ

নিউজ-ডেস্ক:

রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংস নির্যাতনের জন্য দায়ী সেনাদের বিচার ও সহিংসতা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আস্থা রাখা যায় না বলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে জানিয়েছে গাম্বিয়া। নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগের এই আদালতে গণহত্যার মামলার শুনানিতে গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির পক্ষে প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবী একথা বলেন।

১৯৪৮ সালের জেনেভা কনভেনশনের অধীনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়ার করা এই মামলায় গতকাল তৃতীয় ও শেষ দিনে শুনানি ছিল। দেশটির প্রধান কৌঁসুলি পল রিখলার মামলার পূর্ণাঙ্গ শুনানির আগ পর্যন্ত বিচারকদের কাছে বারবার মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সাময়িক পদক্ষেপ দাবি করেন। তিনি বলেন, শুনানির সময় মিয়ানমার এমনকি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বর্বর নির্যাতনের অভিযোগ বা ২০১৭ সালের সাঁড়াশি অভিযানের পর রোহিঙ্গাদের ব্যাপকভাবে দেশান্তরের অভিযোগ অস্বীকার করার চেষ্টা পর্যন্ত করেননি। অন্যায় কর্মকাণ্ডের অভিযোগে সেনা সদস্যদের বিচারে ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে মিয়ানমারের দেওয়া ‘বিবৃতি বিশ্বাসযোগ্য নয়’ নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি। ১৭ সদস্যের বিচারকের প্যানেলের উদ্দেশ্যে এই আইনজীবী বলেন, রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর দায়ে তাতমাদাওকে (মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর আনুষ্ঠানিক নাম) বিচারের মুখোমুখি করা হবে- এটা কীভাবে আশা করতে পারে কেউ, যখন সেনাবাহিনী প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইংসহ ছয় শীর্ষ জেনারেলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশন গণহত্যার অভিযোগ তুলে তাদের ফৌজদারি বিচারের সুপারিশ করেছে। গণহারে হত্যা, ধর্ষণ এবং বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়ে রেহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে পুরোপুরি কিংবা আংশিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়া যে ২০১৭ সালের অগাস্টে রাখাইনে সেনা অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল তা পরের বছর জাতিসংঘের তদন্তকারীদের প্রতিবেদনে উঠে এসেছিল। দুই বছর আগে সেনা বাহিনীর ওই সাঁড়াশি অভিযানের পর প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। অন্তত ১০ হাজার মানুষ নিহত হয় বলে তদন্তকারীদের ধারণা। মঙ্গলবার আদালতে শুনানির প্রথম দিনে জাতিসংঘের ওই তদন্তপ্রতিবেদন থেকে সচিত্র প্রমাণ তুলে ধরে গাম্বিয়ার কৌঁসুলিদের দল।

গাম্বিয়ার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেয়া আইনজীবী পল রিখলার বলেন, মিয়ানমারের আইনজীবী গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণের জন্য সাতটি নির্দেশকের কথা বলেছেন। যা গাম্বিয়ার আবেদনেও রয়েছে। এগুলো মিয়ানমার অস্বীকার করেনি। তিনি বলেন, আদালত নিশ্চয়ই একটি বিষয় লক্ষ্য করেছেন, মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি আদালতে রোহিঙ্গা বিশেষণটি ব্যবহার করেননি। তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কথা বলতে গিয়ে তাদের মুসলিম হিসেবে তুলে ধরেছেন। মিয়ানমারের আইনজীবী গণহত্যার উদ্দেশ্য প্রমাণের জন্য সাতটি নির্দেশকের কথা বলেছেন। যা গাম্বিয়ার আবেদনেও রয়েছে। এগুলো মিয়ানমার অস্বীকার করেনি। গাম্বিয়ার পক্ষে শুনানিতে দেশটির আইনমন্ত্রী আবু বকর তামবাদু বলেন, মিয়ানমার আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র না হতে পারে কিন্তু গণহত্যা সনদে সই করা দেশ গাম্বিয়া। গণহত্যা বন্ধে এবং প্রতিরোধে আমাদের দায়িত্ব আছে। দেশটিতে হুমকিতে রয়েছে রোহিঙ্গাদের জীবন। এসময় তিনি মিয়ানমারের কাছে প্রশ্ন রাখেন- অভ্যন্তরীণ সংঘাত বন্ধে ধর্ষণ-গণহত্যাই কী সমাধান? পরে তিনি ছয়টি অন্তর্বর্তী ব্যবস্থার নির্দেশনা চেয়ে শুনানিতে বক্তব্য শেষ করেন।

বিবাদী পক্ষের ভাষ্য : মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলেন, ২০১৭ সালের অগাস্টে স্থানীয় সশস্ত্র গোষ্ঠী পুলিশের উপর হামলা চালানোর পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ওই অভিযান চালিয়েছিল, কোনো জাতি বা ধর্মীয় সমপ্রদায় তার লক্ষ্য ছিল না। আন্তর্জাতিক আদালতের এই বিচারের এখতিয়ার নেই যুক্তি তুলে ধরে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর বিচারকদের বলেন, সেনা সদস্য বা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ থাকলে মিয়ানমার তা সক্রিয়ভাবে তদন্তের পর দায়ীদের বিচার ও শাস্তি দিয়ে থাকে। তার ভাষ্যে ‘অভ্যন্তরীণ সংঘাতের’ ওই ঘটনায় মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়ে থাকলেও সেগুলো গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে না এবং ১৯৪৮ সালের কনভেনশনের অধীনে তার বিচার করা যায় না। সুচির দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেটিক পার্টির মুখপাত্র মিয়ো নায়ুন্ত রয়টার্সকে বলেন, জটিল রাখাইন ইস্যু নিয়ে খুব বিশদ ও সুনির্দিষ্টভাবে মিয়ানমারের পক্ষে মামলা উপস্থাপন করা হয়েছে।

সুচি-কে ১০ মার্কিন সিনেটরের চিঠি : রাখাইনে রোহিঙ্গা গণহত্যার পক্ষ নেয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সুচিকে চিঠি দিয়েছেন ১০ জন মার্কিন সিনেটর। তারা আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে (আইসিজে) সুচির দেয়া বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে আদালতকে সহায়তা করার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নেদারল্যান্ডসের আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালতে রোহিঙ্গা গণহত্যা শুরুর প্রেক্ষিতে ১০ মার্কিন সিনেটর মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সুচিকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে তারা বলেছেন, সুচির দেয়া বক্তব্য তার ভাবমূর্তি ঝুঁকিতে ফেলেছে।
সুচিকে চিঠি লেখা মার্কিন সিনেটরদের মধ্যে রয়েছেন মার্শা ব্লাকবার্ন, ব্রায়ান শোয়াজ, রিচার্ড ডারবিন, টড ইয়াং, ট্যামি বল্ডউইন, জেফ্রি মার্কলে, রবার্ট ক্যাসি, বেঞ্জামিন কার্ডিন, রন ওয়াউডেন ও ক্রিস ভ্যান হলেন।

ট্যাগ :