মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, সোমবার, ৬ মে ২০২৪ ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাউন্ট এভারেস্ট নামকরণের ১৮৩ বছর পূর্ণ


প্রকাশের সময় :১৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ৬:১৪ : অপরাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট এককালে পরিচিত ছিল ১৫ নম্বর পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে। যদিও ভারত, চীন, নেপাল বা তিব্বতে স্থানীয়ভাবেও ছিল ভিন্ন ভিন্ন নাম। যেমন নেপালিদের কাছে সরগমাথা, তিব্বতে চোমোলাংমা, হিমালয় পর্বতমালার একটি শৃঙ্গ হিসেবে বহুল প্রচলিত হয় হিমালয়, দার্জিলিং অঞ্চলে দেওধুঙ্গা বা পবিত্র পর্বত বলেও পরিচিতি পায়। এমনকি ইউরোপীয়রা কোনো কোনো তথ্যে এটিকে ভুল করে গৌরীশঙ্কর নামে আরেকটি পর্বত পরিচিত করে তুলেছিলেন। তবে এত কিছুর মধ্যে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ও বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত নামটি হচ্ছে মাউন্ট এভারেস্ট।১৭ জানুয়ারি এই ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ নামকরণের ১৮৩তম বার্ষিকী বলে তথ্য রয়েছে বিভিন্ন প্রকাশনায়। অর্থাৎ ১৮৪১ সালের এই দিনে নামকরণ হয় পৃথিবীর সর্বোচ্চ ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ এর। মতান্তরে কোনো কোনো প্রকাশনায় অবশ্যই সালটিকে ১৮৪১ না বলে ১৮৬৫ উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বেশি আছে ১৮৪১ সাল। সর্বশেষ ভারতীয় জরিপে এই শৃঙ্গের উচ্চতা নির্ণয় করা হয় ৮ হাজার ৮৪৮ মিটার বা ২৯ হাজার ২ ফুট।

নামকরণের ইতিবৃত্ত খুঁজতে গিয়ে জানা যায়, ভারতের তৎকালীন সার্ভেয়ার জেনারেল অ্যান্ড্রিউ স্কট ওয়াহর ১৫ নম্বর শৃঙ্গের কোনো স্থানীয় নাম খুঁজে পাননি বলে দাবি করলেও অন্য বিশারদরা স্থানীয় নামগুলোকে তখনো গুরুত্ব দিতেন। তবু অ্যান্ড্রিউ স্কট ওয়াহর সুপারিশে রয়েল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটি ওই ওয়াহর পূর্বসূরি জর্জ এভারেস্টের নামানুসারে ‘১৫ নম্বর পর্বতশৃঙ্গ’র নাম পরিবর্তন করে ‘মাউন্ট এভারেস্ট’ নামকরণ করেন।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, স্কট ওয়াহর যুক্তি ছিল স্থানীয় অনেক নাম থাকায় যেকোনো একটি নাম রাখা ঠিক হবে না, সেই কারণে তিনি তার পূর্বসূরি সার্ভেয়ার জেনারেল জর্জ এভারেস্টের নামে এই শৃঙ্গের নামকরণের সুপারিশ করেন। একটি প্রকাশনায় পাওয়া যায়, জর্জ নিজে তার নাম ব্যবহারের বিরোধী ছিলেন এবং তিনি রয়্যাল জিওগ্রাফিক্যাল সোসাইটিকে জানান যে, এভারেস্ট নামটি হিন্দিতে লেখা যায় না ও ভারতীয়রা উচ্চারণ করতে পারেন না। তা সত্ত্বেও বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম তার নামানুসারে রাখা হয় এভারেস্ট।

তিব্বতী ভাষায় এভারেস্ট পর্বতকে জো-মো-গ্লাং-মা বা পবিত্র মাতা লেখা হয়, যার আনুষ্ঠানিক তিব্বতী পিনয়িন রূপ হলো চোমোলাংমা আবার চীনা রূপ হলো ঝোমোলাংমা ফেং। চীনা ভাষায় একে কখনো কখনো সরল করে শেংমু ফেং ‘পবিত্র মাতা শৃঙ্গ’ বলা হয়ে থাকে। যদিও মাঝেমধ্যে এভারেস্ট পর্বত রাখার বিরুদ্ধে চীনে বা তিব্বতে কিছুটা তৎপরতা হয়। এভারেস্ট নামরকণের বিরোধী গ্রুপের দাবি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকরা এই শৃঙ্গ প্রথম আবিষ্কার করেননি বরং তিব্বতী চীনাদের কাছে চোমোলাংমা হিসেবেই এই পরিচিত ছিল, এমনকি এই নামে মানচিত্রেও চিত্রভুক্ত ছিল।

এর আগে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতগুলোর অবস্থান এবং পরিচয় শনাক্ত করার লক্ষ্যে ১৮০২ সালে ব্রিটিশরা ত্রিকোণমিতিক কাজ শুরু করেন। দক্ষিণ ভারত থেকে এই কাজ শুরু করে জরিপ দল ৫০০ কেজি ওজনের ভারী থিওডোলাইট যন্ত্র বহন করে উত্তরাভিমুখে এগোতে থাকে। ১৮৩০ সালে তারা হিমালয়ের পাদদেশে পৌঁছায়, কিন্তু রাজনৈতিক এবং ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের সন্দেহে নেপাল ব্রিটিশদের তাদের দেশে প্রবেশাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে অনিচ্ছুক ছিল। জরিপ দলের নেপালে প্রবেশের সব আবেদনই প্রত্যাখ্যান করা হয়। ব্রিটিশরা বাধ্য হয়ে নেপালের দক্ষিণে হিমালয়ের সমান্তরালে অবস্থিত তরাই থেকে তাদের পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যায়। বর্ষা ও ম্যালেরিয়ার প্রকোপে বিপর্যস্ত দলটির তিনজন আধিকারিক মৃত্যুবরণ করেন ও দুজন অসুস্থ হয়ে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। পরে ভারতের সার্ভেয়ার জেনারেল অ্যান্ড্রিউ স্কট ওয়াহ হিমালয়ের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত সওয়াজপুর স্টেশন থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ করেন।

সে সময় কাঞ্চনজঙ্ঘাকে বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা হতো, কিন্তু তিনি কাঞ্চনজঙ্ঘা থেকে ২৩০ কিমি দূরত্বে অবস্থিত আরও উচ্চ একটি শৃঙ্গ লক্ষ্য করেন। প্রায় একই সময়ে জন আর্মস্ট্রং নামে তার এক কর্মচারীও আরও পশ্চিম থেকে এই চূড়াটি লক্ষ্য করেন (পিক-বি) হিসেবে অভিহিত করেন। পরে তার পাঠানো আরেক কর্মী নিকলসন ১৯০ কিলোমিটার দূরের জিরোল থেকে দুটি পর্যবেক্ষণ লিপিবদ্ধ করেন। নিকলসন সবচেয়ে বড় থিওডোলাইট নিয়ে পূর্বদিকে যাত্রা করে পাঁচটি বিভিন্ন স্থান থেকে তিরিশেরও বেশি পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন করেন। যার মধ্যে নিকটতমটি ছিল বর্তমান এভারেস্টের ১৭৪ কিমি দূর থেকে নেওয়া। এর একপর্যায়ে নিকলসন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হন এবং তার হিসাব-নিকাশ অসমাপ্ত রেখেই দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হন। তখন মাইকেল হেনেসি নামের আরেকজন সহকর্মী পর্বতগুলোকে রোমান সংখ্যায় প্রকাশ আরম্ভ করেন এবং সেই রীতি অনুযায়ী পিক-বির নতুন নাম হয় (১৫ নম্বর শৃঙ্গ)। আরও পরে দেরাদুন শহরে অবস্থিত সদর-দপ্তরে বাঙালি গণিতবিদ ও পর্যবেক্ষক রাধানাথ শিকদার নিকলসনের মাপজোক থেকে ত্রিকোণমিতিক গণনা করে সর্বপ্রথম নির্ণয় করেন যে, এই শৃঙ্গ বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ।

ট্যাগ :