আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তথ্য প্রযুক্তিবিদ ফাহিম সালেহকে খুন করার কথা অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত টেরেস ডেভোন হ্যাসপিল। এমনকী ‘সেকেন্ড ডিগ্রি মার্ডারের’ অভিযোগ নিয়েও আপত্তি তুলেছেন তিনি। হ্যাসপিলের ব্যক্তিগত আইনজীবীর বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
২১ বছর বয়সী হ্যাসপিলের আইনজীবী রবিবার বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘সত্য খুঁজে বের করার একদম প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছি আমরা। এই মামলার জীবনকাল দীর্ঘ এবং জটিল হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। হ্যাসপিলের আইনজীবী হিসেবে আমরা সবাইকে উদার মানসিকতা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
আইনজীবীরা এমন কথা বললেও পুলিশের ধারণা, ব্যক্তিগত সহকারী হ্যাসপিলই ফাহিমকে খুন করেছেন। ইতিমধ্যে একটি ভিডিওতে তাকে বৈদ্যুতিক করাতও কিনতে দেখা গেছে, যা দিয়ে তিনি নিজের সাবেক বসকে খুন করেন।
পুলিশ বলছে, দোষ অস্বীকার (নট গিল্টি) করলেও আদালতে অভিযোগ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট তথ্য প্রমাণ পুলিশের কাছে রয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে হ্যাসপিলের প্যারোলবিহীন ২৫ বছর থেকে আজীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
এদিকে স্থানীয় সময় রবিবার দুপুরে জানাজা শেষে নিউইয়র্ক সিটির উপকণ্ঠে অরেঞ্জ কাউন্টির প্রাচীন কবরস্থান পোকেসপি রুরাল সেমেট্রিতে ফাহিম সালেহের লাশ দাফন করা হয়। এর আগে জানাজা নামাজে ইমামতি করেন ওয়াপিংগার ফলসের আল নূর মসজিদের ইমাম ওসমানী। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে ফাহিম সালেহর জানাজা এবং দাফন সম্পন্ন হয়। এসময় সেখানে পুলিশের উপস্থিতি ছিল। পরিবারের সদস্য এবং কিছু আমন্ত্রিত প্রতিবেশী যোগ দিয়েছিলেন জানাজায়। ভাইয়ের জানাজায় অংশ নিতে ফাহিমের বড় বোন তার স্বামীকে নিয়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে ছুটে যান নিউইয়র্কে। জানাজায় সংবাদমাধ্যমের উপস্থিতি আগে থেকেই নিষেধ করা হয়েছিল। তবে একটি টেলিভিশনের বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক নারী সাংবাদিক সেখানে উপস্থিত ছিলেন পারিবারিক বন্ধু হিসাবে।
এদিকে ফাহিম হত্যার প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংগঠনের প্রচার সম্পাদক হাজী এনাম। তিনি জানান, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতির কারণে প্রশাসনের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি না পাওয়ায় কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৪ জুলাই মঙ্গলবার বিকালে নিউইয়র্ক সিটির লোয়ার ইস্ট ম্যানহাটনের বিলাসবহুল কনডোমিনিয়াম (অ্যাপার্টমেন্ট) থেকে ফাহিমের টুকরো করা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ফাহিম সালেহ ২০১৫ সালে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করেন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘পাঠাও’। বাংলাদেশে প্রায় ২ লাখ যুবকের কর্মসংস্থান হয় পাঠাওয়ে। এই সাফল্যের ধারাবাহিকতায় পরে নাইজেরিয়ায় চালু করেন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ‘গোকাডা’। সরকার সেটি বন্ধ করে দিলে চালু করেন পার্সেল সার্ভিস। সেটিও জনপ্রিয়তা পায় দেশটিতে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও কলম্বিয়ায় আরও একাধিক প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার ছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত টেক জায়ান্ট ফাহিম সালেহ।