মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

পৃথিবীর কয়েকটি আলোচিত মহামারি


প্রকাশের সময় :৬ মে, ২০২০ ৩:৩৯ : পূর্বাহ্ণ

মোঃ সেলিমঃ

পৃথিবী আনুমানিক ৫০০ কোটি বছরের বয়স্ক। এই বয়সেই সে বহুবার প্রত্যক্ষ সাক্ষী হয়েছে তার বুকে থাকা সবচেয়ে উন্নত অধিবাসীর মহামারিগুলোর। এই নীল গ্রহের অনেক ক্রান্তিকাল গিয়েছে। যা তার শ্রেষ্ঠ অধিবাসীদের মনে আজও নাড়া দেয়।

৪৩০ খ্রিস্টপূর্বে স্মলপক্স রোগ, যা ভেরিওলা ভাইরাসের মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রামক রোগটি একজন মানুষের ত্বকের সঙ্গে আরেকজনের স্পর্শে ছড়ায়। এমনকি বাতাসের মাধ্যমেও এই রোগ ছড়ায়। এই স্মলপক্সের কারণে খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০ এ গ্রিসের এথেন্সে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়, যা ছিল ওই নগরের ২০ শতাংশ মানুষ।

এরপর ৫৪১ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীবাসী ধাক্কা খায় এক ভয়াবক ব্যাকটেরিয়ায়, পূর্ব রোমান সাম্রাজ্যের জাস্টিনিয়ানে ৫৪১ খ্রিস্টাব্দে ব্যাকটেরিয়া বাহিত রোগ প্লেগ ছড়িয়ে পড়ে। প্রায় দুইশ’ বছর এই রোগ মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ভূমধ্যসাগরীয় এলাকায় ছড়ায়। ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ংকর মহামারি বলা হয় একে। দুইশ’ বছরে এই রোগটিতে মারা যায় প্রায় ১০ কোটি মানুষ। ১৩৩৪ সালে গ্রেট প্লেগ অব লন্ডন হিসেবে স্বীকৃত মহামারিটি আসলে ছড়ায় চীন থেকে। এরপর ইতালির ফ্লোরেন্স শহরেই ছয় মাসে প্লেগে মারা যায় ৯০ হাজার মানুষ। ইউরোপজুড়ে মারা যায় আড়াই কোটি মানুষ। এরপর এশিয়ায় ১৩৪৬ সালে প্লেগ মহামারি আকার ধারণ করে। ইতিহাসে তা দ্য ব্ল্যাক প্লেগ হিসেবে বিবেচিত। এই প্লেগ রোগ পরে ইউরোপে ছড়িয়ে পড়লে ইউরোপের ৬০ শতাংশ মানুষ মারা যায়। চার বছরে এশিয়া ও ইউরোপে মারা যায় ৫ কোটি মানুষ।

বর্তমান মেক্সিকোতে ১৫১৯ সালে স্মলপক্স ছড়িয়ে পড়লে দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৮০ লাখ মানুষ। ফ্রান্স, গ্রেট ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ডসবাসীর মাধ্যমে ১৬৩৩ সালে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটসে স্পলপক্স ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় ২ কোটি মানুষ মারা গেছে বলে দাবি করা হয়।

আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় ১৭৯৩ সালে ইয়েলো ফিভার মহামারি আকার ধারণ করে। এতে নগরের ১০ ভাগের এক ভাগ, প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ মারা যায়।

আধুনিক যুগে প্লেগ ছড়ায় ১৮৬০ সালে। এতে চীন, ভারত ও হংকংয়ে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। পরে ১৮৯০ এর দশকে প্লেগের ভ্যাকসিন উদ্ভাবন হয়। বিশ শতকের সবচেয়ে বড় প্লেগ মহামারি দেখা দেয় ১৯১০ সালে। চীনের মাঞ্চুরিয়ায় দুই বছরে মারা যায় প্রায় ৬০ হাজার মানুষ। ১৯১৮ সালে বিশ্বজুড়ে গ্রেট ফ্লু মহামারি রূপ নেয়। এতে দুই বছরে সারা বিশ্বে মারা যায় ৩ কোটির বেশি মানুষ ও ১৯৫২ সালে আমেরিকায় পোলিওতে আক্রান্ত হয় প্রায় ৬০ হাজার শিশু, এতে তিন হাজারের বেশি মারা যায়।

প্রথম এইচআইভি ভাইরাস শনাক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। এই ভাইরাসের কারণে এইডস রোগে সে বছরই আমেরিকায় মারা যায় ৫,৫০০ জন। বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ৩৫ মিলিয়নের অধিক মানুষ এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত। আর এ পর্যন্ত এইডসে মারা গেছে আড়াই কোটির বেশি।

২০০৯ সালে বিশ্বজুড়ে সোয়াইন ফ্লু বা এইচ ওয়ান এন ওয়ান ফ্লুতে ১৮,৫০০ জন মারা গেছে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা ৫ লাখ ৭৫ হাজার বলেও ধারণা করা হয়। ২০১০ সালে হাইতিতে ভয়ংকর এক ভূমিকম্পের পর কলেরা মহামারি রূপ নিলে ১০ হাজার মানুষ মারা যায়।

২০১২ সালে বিশ্বজুড়ে ভাইরাসজনিত রোগ হামে মারা যায় ১ লাখ ২২ হাজার মানুষ। সে বছর পুরো বিশ্বে ব্যাকটেরিয়া সংক্রামক রোগ টিউবারকিউলোসিসে মারা যায় ১.৩ মিলিয়ন মানুষ। এছাড়া প্রতি বছর টাইফয়েড জ্বরে মারা যাচ্ছে ২ লাখ ১৬ হাজার মানুষ। ২০১৪ সালে পশ্চিম আফ্রিকায় ইবোলা জ্বরে মারা যায় অন্তত ১১,৩০০ জন। গেল বছর এশিয়ার কয়েকটি দেশে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ে। তখন ফিলিপাইনে ৭২০ জনের ওপরে ডেঙ্গুতে মারা গেছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়াতেও ছড়িয়ে পড়েছিল ডেঙ্গু। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এটি। গত বছর কয়েকদিনেই সরকারি হিসেবে ৫০ জনের ওপরে মারা গিয়েছিল।

সম্প্রতি বিশ্ববাসী যে মহামারির ভয়ে ভীত হয়ে আছে। আতঙ্কিত পৃথিবীর অনেক দেশ লকডাউন হয়ে আছে। ভাইরাসটি সর্বপ্রথম হানা দেয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে নিউমোনিয়ার মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে উহানের হুয়ানান সামুদ্রিক খাবারের পাইকারি মার্কেটটিকে, পশু উৎস থেকে সংক্রমণের প্রাথমিক স্থান বলে মনে করা হয়।

আমরা অকাল মৃত্যু চাই না। যে মৃত্যুতে মানুষ তার প্রিয়জনের লাশ স্পর্শ করার সাহস পায় না। সন্তান স্পর্শ করতে পারে না তার পিতা-মাতার লাশকে। ভাই ভাইয়ের লাশকে। প্রতিবেশী প্রতিবেশীর লাশকে। আপন মৃত্যুভয়ে শুধু দূর হতে দু’ফোঁটা চোখের জল ঝরানো ছাড়া কিছুই করার থাকে না কারো। এতটা করুণ কষ্টের মৃত্যু কেউই চাই না। সবাই যেন সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলি, নিরাপদ থাকি, অন্যকেও নিরাপদে রাখি।

ট্যাগ :