মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ন্যাটোতে সুইডেনের প্রবেশ নিয়ে অবস্থান পাল্টালেন এরদোয়ান


প্রকাশের সময় :১২ জুলাই, ২০২৩ ৬:১১ : পূর্বাহ্ণ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

সুইডেনকে ন্যাটোতে যোগদানের অনুমতি দিতে সম্মত হয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। লিথুয়ানিয়ায় ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলনের আগে জোট প্রধান জেন্স স্টলটেনবার্গ এবং তুর্কি ও সুইডিশ নেতাদের মধ্যে রুদ্ধদ্বার আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত জানায় আঙ্কারা। এর ফলে ন্যাটো যোগদানে সুইডেনের পথ সুগম হলো। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে বিষয়টি উঠে এসেছে।

লিথুয়ানিয়ার রাজধানীতে সোমবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদান সম্পূর্ণ করা একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। যা এই সংকটময় সময়ে সব ন্যাটো মিত্রদের নিরাপত্তার জন্য সহযোগিতা করবে।

আঙ্কারার সিদ্ধান্ত প্রকাশের কয়েক ঘণ্টা পরে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ঘোষণা করেছে, মার্কিন কংগ্রেসের সঙ্গে পরামর্শ করে তুরস্ককে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান হস্তান্তরের প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়া হবে। ধারণা করা হচ্ছে, সুইডেনের ন্যাটো সদস্যপদে আপত্তি প্রত্যাহারের বদলে যুক্তরাষ্ট্র এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে।

পৃথকভাবে, পেন্টাগন মঙ্গলবার বলেছে, মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিন ফোনে তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলারের সঙ্গে তুরস্কের সামরিক কাঠামো আধুনিকীকরণে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র-তুরস্ক প্রতিরক্ষা চুক্তি ন্যাটোতে সুইডেনের অন্তর্ভুক্তিতে সহযোগিতা করেছে, এটি তার আরেকটি ইঙ্গিত।

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কিনতে চেয়েছিল আঙ্কারা। একই সঙ্গে তাদের মজুতে থাকা যুদ্ধবিমানগুলোকে আধুনিকীকরণ করারও পরিকল্পনা ছিল তাদের। ২০১৯ সালে মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে তুরস্ককে বাদ দেওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে এই উদ্যোগের প্রতি আগ্রহী হয় এরদোয়ানের প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের আপত্তির পরও রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনার কারণে তুরস্ককে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান প্রকল্প থেকে বাদ দেয় ওয়াশিংটন।

এর ফলে দুই ন্যাটো মিত্রের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সংকট দেখা দেয়। ২০২০ সালে প্রতিরক্ষা খাতে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। কোনও ন্যাটো মিত্রের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সর্বাত্মক আক্রমণ করে। এরপর দীর্ঘদিনের সামরিক নিরপেক্ষতা পরিহার করে ন্যাটোতে যোগদানের আবেদন করে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। শুরুতে উভয় দেশের যোগদানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয় তুরস্ক। কয়েক দফা আলোচনার পর ফিনল্যান্ডের প্রস্তাবে সম্মতি দেয় আঙ্কারা। তবে সুইডেনের প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া থেকে এত দিন বিরত ছিল এরদোয়ানের সরকার। ধারণা করা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের কারণে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানে এক বছরের বেশি সময় ধরে আপত্তি জিইয়ে রাখে তুরস্ক।

তুরস্কের এজেন্ডা

গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের মধ্যপ্রাচ্য কাউন্সিলের একজন অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো গালিপ ডালের মতে, ন্যাটোতে সুইডেনের সদস্যপদের বিষয়টি নিয়ে তুরস্কের অবস্থান মূলত ছিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি। ওয়াশিংটনের কাছ থেকে এফ-১৬ নিয়ে আঙ্কারার প্রত্যাশা এই প্রক্রিয়ার শুরু থেকেই স্পষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে সুইডেনের ইস্যুকে কেন্দ্র করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চেয়েছিল।

ডালে বলেছেন, সুইডেনকে ব্যবহার করে তুর্কি প্রেসিডেন্ট ‘সন্ত্রাসবাদ’ নিয়ে তার উদ্বেগ সম্পর্কে পশ্চিমাদের কাছে একটি বার্তা দিতে চেয়েছিলেন। আঙ্কারা চায় সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে আইন পরিবর্তন করুক সুইডেন। যাতে অন্যান্য পশ্চিমা মিত্রদের ওপর প্রভাব পড়ে। আঙ্কারা যে গোষ্ঠীগুলোকে সন্ত্রাসবাদী হিসেবে বিবেচনা করে তাদের প্রতি একই পদক্ষেপ নিতে তারা চাপ দিচ্ছে।

ডালে আরও বলেছেন, এরদোয়ান তুরস্ক-ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) সম্পর্কের বিষয়ে যা চেয়েছিলেন তা অর্জন করেছেন।

সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তুরস্কের ইইউতে যোগদান প্রক্রিয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। সুইডেনকে ন্যাটোতে যোগদানের সম্মতি দিতে এরদোয়ান ব্লকটিতে তুরস্কের যোগদানের দাবি তুলেছিলেন। ২০০৫ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের তুরস্কের যোগদানের আলোচনা শুরু হলেও ২০১৬ সালে ভেস্তে যায়।

লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে ন্যাটোর শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে সোমবার এরদোয়ান বলেছিলেন, আমি এখান থেকে এই দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি যারা ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে তুরস্ককে ইইউয়ের দরজায় অপেক্ষা করিয়ে রেখেছে।

তিনি বলেন, ‘প্রথমে ইইউতে তুরস্কের জন্য পথ উন্মুক্ত করুন এবং তারপরে আমরা সুইডেনের জন্য পথ খুলে দেবো। যেমনটি আমরা ফিনল্যান্ডের জন্য করেছি।’

দোহায় আরব সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি স্টাডিজের নীতি বিশ্লেষণ পরিচালক মারওয়ান কালাবান বলেছেন, তুর্কি প্রেসিডেন্ট জানতেন তিনি যে দাবি তুলেছেন তা পূরণ করা হবে না। সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ-এর কাছ থেকে এই দর কষাকষির মাধ্যমে সর্বোচ্চটা আদায়ের চেষ্টা করেছেন তিনি।

কালাবান আরও বলেছেন, তবে এরদোয়ান সম্ভবত পশ্চিমাদের সঙ্গে বিস্তৃত সংকট এড়াতে চেয়েছিলেন। কারণ তার দেশ কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্সের মধ্যপ্রাচ্য কাউন্সিলের একজন অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো গালিপ ডালে বলেন, তুরস্কের ইইউ এবং সুইডেনের ন্যাটো উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে সংযুক্ত করে কাস্টমস ইউনিয়ন এবং ভিসামুক্ত ভ্রমণের বিষয়ে সমর্থন পেতে চেয়েছিলেন এরদোয়ান।

আঙ্কারা এখনও চুক্তির বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি এবং সুইডেনের ন্যাটোতে প্রবেশ তুরস্কের পার্লামেন্ট দ্বারা অনুমোদনের পর বাস্তবায়িত হবে। এই প্রক্রিয়ার জন্য এখনও কোন সময়সীমার কথা জানা যায়নি।

ট্যাগ :