আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
চীন তার নিকটবর্তী দেশগুলোর সমুদ্র জলসীমার নিকটে সামরিক ও বেসামরিক নৌ বহর পরিচালনার মাধ্যমে ক্ষমতা প্রদর্শন করছে বলে অভিযোগ করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। এবার ইকুয়েডরের ‘উদ্বেগ’ প্রকাশে পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিকটে চীনের ছোট মাছ ধরার ২৬০ জাহাজের সমন্বয়ে তৈরি নৌ বহর নিয়ে ‘উদ্বেগ’ প্রকাশ করেছে ইকুয়েডর। ‘ভাসমান শহর’ নামে পরিচিত এই নৌবহরের কারণে ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্য বা ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট গ্যালাপাগোস দীপপুঞ্জের বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীগুলো হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে জানিয়েছে দেশটি। এই দ্বীপপুঞ্জে বিলুপ্ত প্রজাতির হাঙ্গর, শিল মাছ এবং আলবাট্রসসহ বেশ কিছু জলজ বন্যপ্রাণী বাস করছে। প্রায় ৬০ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুরে বিস্তৃত এই দ্বীপপুঞ্জ ইকুয়েডরের অংশ। দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের ভূ-খণ্ড থেকে এটি প্রায় ১ হাজার কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। ইকুয়েডর জানায়, প্রতি বছর চীনের বিভিন্ন সমুদ্রযান থেকে এই দ্বীপকে রক্ষা করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
মাদ্রিদ ভিত্তিক এল পায়েস জানায়, ইকুয়েডর এবং গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের নিকটবর্তী আন্তর্জাতিক জলসীমার একটি করিডোর রয়েছে যেখান দিয়ে চীনের পাশাপাশি লাইবেরিয়া ও পানামার পতাকাবাহী জাহাজের সমন্বয়ে একটি ছোট নৌবহর যাতায়াত করছে, যা ইকুয়েডরের মূল ভূখণ্ড ও এই দীপপুঞ্জ থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থিত।
এ প্রসঙ্গে দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জানায়, প্রতি বছর চীনের ২৪৫টির বেশি জাহাজের সমন্বয়ে এই নৌ বহর যাতায়াত করে যা আমাদের জলসীমার ভিতরে না হলেও একেবারে কাছা কাছি চলে আসে।
২০১৭ সালে চীনের একটি জাহাজ ইকুয়েডরের জলসীমায় প্রবেশ করলে তাকে আটক করে দেখা যায়, সেখানে প্রায় ৩০০ টন ওজনের বিভিন্ন জলজ বন্যপ্রাণী রয়েছে, যাদের মধ্যে হাতুড়ি মাথার বিপন্ন প্রায় প্রজাতির হাঙ্গরও ছিলো। এক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন অনুসারে চীনের বাজারে বিক্রি হওয়া হাতুড়ি মাথার হাঙ্গরের বড় অংশ সংগ্রহ করা হয় এই গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের কাছ থেকে।
দীর্ঘদিন ধরে চীনের এই কার্যক্রমে বিরক্ত থাকলেও এবারই প্রথম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইকুয়েডর। দেশটির প্রেসিডেন্ট লেনিন মোরেনো জানান, আমরা এ বিষয়ক ‘হুমকি’ নিয়ে পেরু, চিলি, পানামা ও কলম্বিয়ার সঙ্গে আলোচনা করব। যারা অতীতে বিভিন্ন সময় এই কার্যক্রমের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জুলাই মাসের ১৬ তারিখে ইকুয়েডরের কাছ থেকে এই উদ্বেগের কথা জানার পর ২৯ জুলাই দেশটির পাশে থাকার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। দীর্ঘদিন যাবৎ সমুদ্রে চীনের বেশ কিছু কার্যক্রমের বিরোধিতা করে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চীন সামরিক ও বেসামরিক নৌবহর বিভিন্ন দেশের জলসীমার নিকটবর্তী পাঠিয়ে পেশি শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।