নিউজ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সঠিকভাবে জানার আগেই গণহারে এটির উৎপাদন শুরু করেছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট।
বিজনেস ইনসাইডারের প্রতিবেদনে বলা হয়, সেরাম ইন্সটিটিউট প্রতি বছর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে দেড় বিলিয়নের বেশি ভ্যাকসিন তৈরি করে থাকে। ওই কোম্পানির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি ভ্যাকসিন তারা ব্যাপাকহারে উৎপাদন শুরু করেছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা গত বৃহস্পতিবার মানবদেহে প্রথম করোনাভ্যাকসিনের পরীক্ষা চালান। তারা বলছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মানবদেহে পরীক্ষা চালাবে উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনের। যুক্তরাজ্যের সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ১১০০ মানুষের শরীরে এর পরীক্ষা চালাবে তারা।
মঙ্গলবার গবেষকদের ওই দলটি জানিয়েছেন, যদি ভ্যাকসিনটি কাজ করে তাহলে যথেষ্ট তথ্য সংগ্রহে কয়েক মাস সময় লাগবে। যদি কিছু ত্রুটি দেখা যায়, তাহলে ভ্যাকসিনটি উপযুক্ত করে তুলতে ছয় মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তারা প্রত্যাশা করছেন, সেপ্টেম্বরের মধ্যে ১০ লাখের মতো ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হবে।
তবে সেরাম ইন্সটিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা সোমবার টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, এত দীর্ঘ সময় পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করতে চান না। এক মাসের মধ্যেই ৫০ লাখ ভ্যাকসিন তৈরি করবে তার প্রতিষ্ঠান। আর ছয় মাসের মধ্যে চাহিদা অনুসারে ভ্যাকসিন তৈরি করা সম্ভব হবে।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাজ্যে ট্রায়াল শেষ হওয়ার আশায় আমরা বসে থাকব না। আমরা নিজেরাই ঝুঁকি নিয়ে অর্থ ব্যয় করব।যদি পরীক্ষা সফল হয় তাহলে আমাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ ভ্যাকসিন থাকবে। মাসে ৪০ থেকে ৫০ লাখ ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা আমাদের লক্ষ্য।পরীক্ষায় সফল হলে এটিকে ১ কোটিতে নেয়া সম্ভব।আমরা সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২-৪ কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চাইছি। তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে ভারতে এর দাম ১ হাজার রুপির মধ্যে রাখতে।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সারাবিশ্বে করোনাভাইরাসের অন্তত ৮০টি ভ্যাকসিন উদ্ভাবনের চেষ্টা চলছে। গত ১০ জানুয়ারি করোনার ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা শুরু করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। এরপর ১৮ মার্চ তারা মোটামুটি সফলতার গল্প শোনায়। ওই গবেষকরা এর আগেও ভ্যাকসিন আবিষ্কার করতে নেমে সফল হয়েছেন।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের পরিসংখ্যান প্রদানকারী সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের ওয়েবসাইট থেকে মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ভারতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেনে ২৯ হাজার ৪৫১ জন। এ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আক্রান্তদের মধ্যে ৭হাজার ১৩৭ জন (৮৮ শতাংশ) সুস্থ হয়ে উঠেছেন এবং ছয় হাজার ৯৩৯ জন (১২ শতাংশ) রোগী মারা গেছেন।