নিউজ ডেস্কঃ
মুখে মাস্ক, কন্ঠে আনন্দ আর উত্তেজনা। এ আনন্দ মুক্তির। এ আনন্দ অবরুদ্ধতার অবসানের। চীনের উহানে বুধবার ৭৬ দিনের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। তাই উহান ছাড়ার ঢল নেমেছে। হাজার হাজার উৎফুল্ল লোক ভিড় করেছে বাস ও ট্রেন স্টেশনে। অনেক যাত্রীর পরনে দেখা গেছে সুরক্ষা স্যুট।
এক কোটি ১০ লাখ লোকের এই উহান শহর থেকেই প্রথম করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছিল। যা এখন বিশ্বের ত্রাস।
হাও মেই। একজন মা। একাই দুবাচ্চাকে বড়ো করছিলেন। এনশি শহরের কাছেই বাস। কিন্তু কাজ করেন উহানের এক স্কুলে। তিনি আটকা পড়েন উহানে। সে থেকে ছোট দুটি সন্তান বাড়িতে একা।
৩৯ বছর বয়সী হাও বলেন, আমি চারটায় এসে পৌছেছি। আমি খুবই খুশি। আমার সন্তানেরাও খুব উত্তেজিত। শেষ পর্যন্ত মা বাড়ি এসেছে।
তিনি বলেন, লকডাউন শুরুর পর প্রতি রাতে আমি কেঁদেছি। আমি খুবই কষ্টে ছিলাম। কারণ আমার মেয়েটি খুব ছোট। তার বয়স মাত্র ১০ বছর।
সরকারি হিসেব মতে, প্রায় ৫৫ হাজার লোক বুধবার কেবলমাত্র ট্রেনে উহান ছাড়ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
চীনের উহানে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্তের পর থেকে এখানে নজিরবিহীন লকডাউন শুরু হয়।
চীনের রোগ নিন্ত্রয়ণ কর্মকর্তারা বলছেন, উহানের একটি পশু বাজার থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়েছে। এতে চীনে মারা গেছে ৩,৩০০ লোক।
এদিকে গত মধ্যরাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দেয়ার পর হাজার হাজার লোকের উহান ছাড়ার প্রাক্কালেও তাদের যথাযথ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। এমনকি অনেককে তাদের গন্তব্যে দুই সপ্তাহের কোয়ারাইনটাইনও মানতে হবে।
রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত পিপলস ডেইলি পত্রিকা বুধবার সতর্ক করে বলেছে, খুলে দেয়া মানে নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা নয়।
কর্মকর্তারা বলছেন, উহানে স্কুল বন্ধ থাকবে। শহর ছাড়তে নাগরিকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
তা সত্ত্বেও সরকারের ধারণা, প্রায় অর্ধেক লোক বুধবার উহান ছাড়ছে। তাদের অনেকের গন্তব্য অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী গুয়াংডং প্রদেশ। বিশেষ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্যে এটি চৌম্বক স্থান।