আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে প্রাণহানি ১০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ৭ অক্টোবর থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত এক মাসে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ১০ হাজার ২২ জনে পৌঁছেছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা। এদিকে, ইসরায়েলে নিহত হয়েছে এক হাজার ৪০০ জনেরও বেশি লোক।
গত রোববারও রাতভর বিমান হামলায় অন্তত ২০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। অনেকে চাপা পড়েছে ধ্বংসস্তূপে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, রোববার রাত থেকে গাজায় ৪৫০টি বিমান হামলা চালিয়েছে তারা।
সেনাবাহিনীর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানান, সেনারা গাজায় প্রবেশ করে উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে এবং কার্যত তারা গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগ করে ফেলেছে। সেনারা গাজার শহরটিকেও ঘিরে ফেলেছে। ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, তারা হামলা আরও জোরদার করবে।
হামাসের আল-কাসাম ব্রিগেড বলছে, গাজার তিনটি ভিন্ন স্থানে তাদের যোদ্ধারা ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করছে। গাজার সরকারি মিডিয়ার তথ্যানুযায়ী, বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে না– ইসরায়েলের এমন দাবি পুরো মিথ্যা।
ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মাদ শতায়েহের সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেশ কিছু বিষয় আলোচনা করেছেন। তারা যুদ্ধবিরতির জন্য বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত পদক্ষেপ চান। নেতারা বলেন, গাজার দৃশ্য মানুষের সহ্যের বাইরে চলে গেছে। শিশুরা বোমা, ক্ষুধা ও ভয়ে মারা যাচ্ছে। চিকিৎসাসেবা মিলছে না, অ্যাম্বুলেন্সেও সরাসরি বোমা হামলা করছে ইসরায়েল।
জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় গাজার আল-শিফা হাসপাতাল প্রায় বন্ধের পথে। এটি গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল। হাসপাতালটিতে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ৪০ হাজার মানুষ, হাজার হাজার আহত ফিলিস্তিনি এবং ইনকিউবেটরে থাকা শিশুদের মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলবে। গাজার একমাত্র বিশেষায়িত মানসিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রও ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েল।
গাজা উপত্যকা শিশুদের গণকবরে পরিণত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, ‘গাজায় শত শত শিশু নিহত হয়েছে। প্রতিদিন অসংখ্য শিশু আহত হচ্ছে। এই সংঘাত নিষ্পাপ শিশুদের জীবন কেড়ে নিচ্ছে।’ তার এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এলি কোহেন।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। জবাবে ওই দিন থেকেই গাজাকে অবরুদ্ধ করে নির্বিচার বোমা হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল।