আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিলিয়ন ডলার মার্কিন সামরিক সহায়তা পাওয়ার পরও ইউক্রেন যুদ্ধে নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখতে চাইছে কায়রো। আর এ কারণেই ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে মিসর। ফাঁস হওয়া মার্কিন নথির বরাতে শুক্রবার এ তথ্য জানায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল (ডব্লিউএসজে)।
এতে বলা হয়েছে, মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসিকে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠাতে বলেছিলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন। মার্চে এক চিঠির মাধ্যমে তা প্রত্যাখ্যান করে কায়রো।
এপ্রিলে ফাঁস হওয়া কিছু মার্কিন নথিতে দেখা গেছে, সিসি প্রথমে গোপনে রাশিয়াকে ৪০ হাজার রকেট সরবরাহ করার পরিকল্পনা করেছিলেন। পশ্চিমের সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে চুক্তিটি গোপন রাখতে কর্মকর্তাদের বলেছিলেন তিনি।
ফাঁস হওয়া আরেকটি নথিতে দেখা গেছে, পরে মার্কিন চাপে সেই পরিকল্পনা থেকে সরে আসে মিসর। তার পরিবর্তে ইউক্রেনের জন্য আর্টিলারি গোলাবারুদ তৈরি করতে সম্মত হয় কায়রো।
ডব্লিউএসজে বলছে, ইউক্রেনকে আর্টিলারি শেল, অ্যান্টিট্যাঙ্ক মিসাইল, বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ছোট অস্ত্র দিতে বলেছিল ওয়াশিংটন। জবাবে মিসরীয় কর্মকর্তারা ব্যক্তিগতভাবে ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর ইচ্ছা না থাকার কথা জানিয়েছিলেন।
মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে মিসর একা নয়, যারা রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ইউক্রেনকে সাহায্য করার জন্য মার্কিন আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে। সংঘাতে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া তুরস্কও মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে রুশ তেল ব্যবসায়ীদের দুবাইয়ে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
তবে এসবের মধ্যে মিসরের প্রত্যাখ্যানের বিষয়টি আলোচিত বেশি। কারণ, সামরিক সাহায্যের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অনেক বেশি নির্ভরশীল কায়রো। সামরিক খাতে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বছরে ১.৩ বিলিয়ন ডলার পায় মিসর।
এই সহায়তার বেশিরভাগ অংশ ফরেন মিলিটারি ফাইন্যান্সিং বা এফএমএফ নামে একটি প্রোগ্রামের মাধ্যমে আসে। মিসরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউ ইয়র্কে নির্ধারিত একটি তহবিলও রয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ কায়রোতে প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় তহবিল ব্যবহার করে মিসরের পক্ষে মার্কিন প্রতিরক্ষা ঠিকাদারদের কাছ থেকে কেনাকাটা করে থাকে।
সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল