এম.এইচ মুরাদ:
মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) বিশ্বের চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশে হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, চলতি অর্থবছরে (২০১৯-২০) বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস ২০২০’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে প্রবৃদ্ধির বৈশ্বিক পূর্বাভাসে একথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুসংহত সামষ্টিক অর্থনৈতিক কাঠামো, ব্যবসায় সহজ করার নানা উদ্যোগ, পরিকল্পনামাফিক বড় প্রকল্পে বিনিয়োগ ইত্যাদি বিবেচনা করেই বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের ওপরে থাকবে বিশ্বের আর তিনটি দেশ- গায়ানা, রুয়ান্ডা ও জিবুতি। গায়ানাতে সর্বোচ্চ ৮৬ দশমিক ৭ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে। দেশটির অর্থনীতির ভিত্তি বেশ ছোট বলেই তা সম্ভব হতে পারে। এ ছাড়া রুয়ান্ডার ৮ দশমিক ১ ও জিবুতির সাড়ে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।
বিশ্বব্যাংক মনে করছে, দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি হবে। তবে ভারতের প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। চলতি অর্থবছরে দেশটির জিডিপির প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা গত অর্থবছরে ছিল ৫ শতাংশ। পাকিস্তানের প্রবৃদ্ধি কমে নেমে আসবে ২ দশমিক ৪ শতাংশে। নেপালে ৬ দশমিক ৪, ভুটানে ৫ দশমিক ৬, মালদ্বীপে সাড়ে ৫, শ্রীলঙ্কায় ৩ দশমিক ৩ এবং আফগানিস্তানে ৩ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হবে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছর বাংলাদেশে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। সেই তুলনায় এ বছর তা ব্যাপকভাবে কমে যাবে। তবে আগামী দুই অর্থবছরেই বাংলাদেশে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ হারে জিডিপির প্রবৃদ্ধি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্বব্যাংক বলছে, দক্ষিণ এশিয়ায় তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ বাংলাদেশ। দেশটিতে গত অর্থবছরে ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হয়। তখন অভ্যন্তরীণ চাহিদা বাড়ার পাশাপাশি রফতানি আয়ে বেশ প্রবৃদ্ধি ছিল। চীন-যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে রফতানি আয়ে কিছুটা সুফল পেয়েছে বাংলাদেশ। এ দেশে বড় প্রকল্পসহ অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ বেড়েছে। ফলে ব্যবসায় আস্থা আসছে।
তবে কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও বলছে বিশ্বব্যাংক। তা হলো- দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মতো বাংলাদেশেও বিনিয়োগ ঘাটতি রয়েছে। আছে আর্থিক খাতেও নানামুখী চ্যালেঞ্জ, যা বিঘ্ন ঘটাচ্ছে অর্থনীতিতে। রাজস্ব খাতের সংস্কারে অগ্রগতি হয়নি। ফলে কর আদায়ে নেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি।