রাজশাহী প্রতিনিধি:
সারা দেশের ন্যায় রাজশাহীতেও মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এতে উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। অনুসন্ধানে জানা গেছে সামাজিক, পারিবারিক, অর্থনৈতিক চাপ, মাদকাসক্ত ও ইন্টারনেটে আসক্তই এর মূল কারণ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত গত এক বছরে হাসপাতালের বহির্বিভাগের মানসিক বিভাগে চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ১২৪ জন রোগীকে। জানা গেছে, রাজশাহীর প্রায় ২৫ লাখ মানুষসহ পার্শ্ববর্তী জেলা থেকে আসা রোগীর জন্য চিকিৎসক রয়েছেন চারজন। এর মাঝে তিনজন রয়েছেন বিশেষজ্ঞ ও এক রয়েছেন মেডিকেল অফিসার।
প্রতিদিন বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬০ থেকে ৯০ জন রোগী। আর প্রাইভেট ক্লিনিকগুলোতে যে স্বাস্থ্যসেবা দেয়া হয় তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। রামেক হাসপাতালের বহির্বিভাগে সবধরনের সুযোগ-সুবিধা না থাকায় গুরুতপূর্ণ রোগীদের পাঠানো হয় পাবনা মানসিক হাসপাতালে। আর বাকি রোগীদের ফলোআপে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশের জনসংখ্যার মোট ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ মানুষ মানসিক রোগে ভুগছেন। এদের মধ্যে যারা মানসিক বিষন্নতায় ভুগছেন তাদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা কাজ করে। নগরায়ণ, আর্থসামাজিক অবস্থা, মানসিক চাপ, বংশগত ও সামাজিক কারণে মানসিক রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে মানসিক রোগীদের প্রতি সমাজের ভুল ধারণা ও তাদের প্রতি খারাপ আচার আচরণ দূর করতে সকলকে উদ্যোগী হয়ে জনসচেতনতা বাড়ালে মানসিক রোগীদের সুস্থ করা যাবে এবং সংখ্যা অনেকটা কমিয়ে আনা সম্ভব বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাইকিয়াট্রি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মঈন উদ্দিন আহমেদ বলেন, সাধারণত ১৪ থেকে ৫০ বছর বয়সীদেরকে বিভিন্ন সমস্যায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসেন তরুণরা। তাদের বেশিরভাগই সামাজিক, পারিবারিক ও মাদকাসক্তি সমস্যায় ভুগেন। তবে তাদেরকে পরিবার ও সামাজিকভাবে সহযোগিতা করে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী ওষুধ খেলে সুস্থ করা সম্ভব। এ সময় রোগীর সাথে খারাপ আচার আচরণ করা থেকে বিরতি থাকতে হবে। তাদের পাশে থেকে সুন্দর ব্যবহারের দ্বারা বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে। রোগীর সাথে কখনোই খারাপ ব্যবহার করা যাবে না। তাদের সর্বক্ষণ নজরে রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুয়ায়ী চলতে হবে।