মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নখের রোগের লক্ষণ, প্রতিকার ও প্রতিরোধের উপায়


প্রকাশের সময় :১০ নভেম্বর, ২০২০ ৩:৪৬ : অপরাহ্ণ

ডা: নুসরাত সুলতানাঃ

সুন্দর হাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো নখ। সেই নখেই যদি রোগ থাকে, তাহলে যেমন দৃষ্টিকটু, তেমন বিব্রতকর। নখের খুব কমন একটি রোগ নিয়ে আজ জানানোর চেষ্টা করবো।

নখের ফাংগাল ইনফেকশন/অনাইকোমাইকোসিস, (Onychomycosis বা Taenia unguium) :

অনাইকোমাইকোসিস হলো ছত্রাকের সংক্রমণ যা হাতের বা পায়ের নখকে আক্রমণ করে। ছত্রাকের সংক্রমণ সাধারণত সময়ের সাথে সাথে বাড়তে থাকে। তাই আপনার নখের যে কোন পরিবর্তন প্রথমে খুব সূক্ষ্ম হতে পারে। এরকম নখের কোন পরিবর্তন দেখলেই চর্ম রোগ বিশেষজ্ঞের সাথে যোগাযোগ করুন।

কারা এ সংক্রমণের ঝুঁকিতে?

নখে ছত্রাক সংক্রমণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে এবং প্রতিটি কারণের নিজস্ব একটি চিকিত্সা আছে। যদিও ছত্রাকের সংক্রমণের অনেক কারণ প্রতিরোধযোগ্য ,তবে কিছু ঝুঁকির কারণ এটির বিস্তারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে।নিম্নোক্ত কয়েকটি অবস্থায় নখের ছত্রাক সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশিঃ 

১। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যাতে রক্ত ​​সঞ্চালন ব্যহত হয়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

২।৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ

৩।কৃত্রিম নখ ব্যবহারের ফলে।

৪।পাবলিক সুইমিং পুলে সাঁতার কাটা।

৫।পূর্ববর্তী নখের আঘাত।

৬। নখের চারপাশে ত্বকের যে কোন ইনফেকশন বা ইঞ্জুরি।

৭। দীর্ঘ সময়ের জন্য পা বা হাতের আংগুল আর্দ্র পরিবেশে রাখা, যেমন দীর্ঘক্ষণ গ্লাভস বা জুতো পরে থাকা।

৮।অনাইকোমাইকোসিস মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের মধ্যে প্রায়শই দেখা যায় এবং বাচ্চাদের তুলনায় প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। 

যদি পরিবারের এমন সদস্য থাকেন যাদের প্রায়শই এই ধরণের ছত্রাকের সংক্রমণ হয়, তবে আপনারও সেগুলি হবার সম্ভাবনা বেশি। বয়স্ক ব্যক্তি নখের ছত্রাক সংক্রমণ এর ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি কারণ তাদের রক্ত ​​সঞ্চালন কমে যায় এবং তাদের নখগুলি বয়সের সাথে সাথে ধীরে ধীরে আরও পুরু হয়ে যায়।

অনাইকোমাইকোসিস কেন হয়?

নখের নীচেই সাধারণত ছত্রাকের সংক্রমন বেশি হয়ে থাকে। ছত্রাক উষ্ণ, আর্দ্র পরিবেশে বেশি বিস্তার ঘটায়, তাই নখে এই জাতীয় পরিবেশ তাদের প্রাকৃতিকভাবে অতিরিক্ত সংক্রমণ ঘটাতে সাহায্য করে। একই ধরণের ছত্রাক অ্যাথলেট দের পায়ে এবং মানুষের শরীরে দাদরোগের  সংক্রমণ ঘটায়।

শরীরের অন্য কোন স্থানে যদি ছত্রাকের সংক্রমণ আগে থেকেই থাকে, তাহলেও নখে সংক্রমণ হতে পারে। আপনি যদি এমন কারও সংস্পর্শে আসেন যার মধ্যে ছত্রাকের সংক্রমণ রয়েছে তবে এটি আপনার শরীরে ও নখে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আঙুলের নখের চেয়ে ছত্রাকের সংক্রমণগুলি সাধারণত পায়ের নখকে বেশি আক্রমন করে কারণ পায়ের আঙ্গুলগুলি সাধারণত জুতোতে বদ্ধ থাকে, যেখানে তারা উষ্ণ, আর্দ্র পরিবেশে থাকে।

আপনি যদি সেলুনে ম্যানিকিউর বা পেডিকিউর করান, তবে জিজ্ঞাসা করতে ভুলবেন না যে কর্মীরা কীভাবে তাদের সরঞ্জামগুলি ডিসইনফেক্ট বা জীবাণুমুক্ত করে এবং কতবার তারা তা করে। কারণ সরঞ্জামগুলি যদি স্যানিটাইজ না করা হয় তবে তা ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছত্রাকের সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে।

অনাইকোমাইকোসিস এর লক্ষণঃ

নখের ফাংগাল ইনফেকশন বা অনাইকোমাইকোসিস নখের আংশিক, বা পুরো বা কয়েকটি নখকে একসাথে আক্রমন করতে পারে।

দৃশ্যমান লক্ষণঃ

১।নখের নীচে স্কেলিং, যাকে বলা হয় সাব আংগুয়াল হাইপারকেরাটোসিস।

২।নখের উপরে সাদা বা হলুদ রেখা, যাকে লেটারাল অনাইকোমাইকোসিস বলা হয়।

৩।নখের কিণারা বা আগার দিকে ভেঙে যাওয়া,যাকে ডিস্টাল অনাইকোমাইকোসিস বলা হয়।

৪। নখের উপর সাদা অংশগুলি গুড়ো গুড়ো চামড়ার মতো ওঠা, সাথে  পিট বা ছোট ছোট গর্তের মতো থাকতে পারে।

৫।নখের নীচে হলুদ দাগ, যাকে প্রক্সিমাল অনাইকোমাইকোসিস বলা হয়।

সাধারণ নখের রোগের লক্ষণ সমূহঃ

১। আংগুল থেকে নখের বৃদ্ধিতে পরিবর্তন, যেমন অস্বাভাবিক মোটা বা ভাংগা নখ।

২।সংক্রমিত নখ থেকে গন্ধ আসা।

৩। নখের চারপাশের ত্বকে ইনফেকশন, চুলকানি।

কী ধরণের চিকিৎসা দেয়া হয়?

ওরাল অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ, যেমন:

  1. Fluconazole
  2. Itraconazole
  3. Terbinafine
  4. Griseofulvin

এছাড়া অ্যান্টিফাঙ্গাল নেইল পেইন্ট বা সলুশন ব্যবহার করা যায়।

এসব চিকিত্সাতে সংক্রমণের কারণ ও ছত্রাকের ধরণের উপর এবং সংক্রমণের পরিমাণের উপর নির্ভর করে বেশ কয়েক মাস ধরে এই ওষুধগুলি ব্যবহার করতে হতে পারে।

অনাইকোমাইকোসিস বা নখের ফাঙ্গাল ইনফেকশন প্রতিরোধের কিছু টিপ্সঃ

কিছু সাধারণ জীবনযাত্রার পরিবর্তন নখের ছত্রাক সংক্রমণ রোধ করতে সহায়তা করে। 

যেমনঃ 

১।আপনার নখগুলো সবসময় ভাল এবং পরিষ্কার করে কেটে রাখা ও যথাযথ যত্ন নেওয়া সংক্রমণ প্রতিরোধের একটি ভাল উপায়। 

২।নখের চারপাশের ত্বককে আঘাত থেকে নিরাপদ রাখা। 

৩।আপনি যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য স্যাঁতসেঁতে বা ভেজা পরিবেশে হাতের কাজ করে থাকেন, তবে রাবারের গ্লাভস পরতে পারেন। আজকাল সুপার শপ বা ক্রোকারিজের দোকানে এ ধরণের গ্লাভস পাওয়া যায়।

নখের ছত্রাক সংক্রমণ প্রতিরোধের অন্যান্য উপায়গুলির মধ্যে রয়েছে:

১।অ্যান্টিফাঙ্গাল স্প্রে বা পাউডার নিয়মিত ব্যবহার করা

২।সংক্রমিত নখ স্পর্শ করার পরে হাত ভালভাবে ধুয়ে ফেলা

৩।গোসলের পর পা ভালভাবে শুকানো, বিশেষত পায়ের আঙ্গুলের মাঝের অংশগুলো

৪। বিশ্বাসযোগ্য ও পরিচ্ছন্ন সেলুন থেকে ম্যানিকিউর বা পেডিকিউর করা

৫। সম্ভব হলে ম্যানিকিউর বা পেডিকিউরের জন্য নিজস্ব সরঞ্জাম ব্যবহার করা

৬।মোজা পরা যা আর্দ্রতা হ্রাস করে।

৭।ভেজা অপরিস্কার জায়গায় খালি পায়ে চলা এড়ানো।

৮।কৃত্রিম নখ এবং নেইল পলিশ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা।

পরামর্শেঃ

ডা: নুসরাত সুলতানা

ক্লিনিক্যাল, কসমেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এন্ড লেজার স্পেশালিষ্ট।

ট্যাগ :