মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দূষিত পানির রমরমা বাণিজ্য! স্বাস্থ্যঝুঁকির আশংকা


প্রকাশের সময় :২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ৫:১৯ : পূর্বাহ্ণ

কে এম জাহেদঃ

যানজটে বসে অথবা কোথাও বেড়াতে গিয়ে তৃষ্ণা মেটাতে মানুষ খুঁজতে শুরু করে বিশুদ্ধ পানি। কিন্তু ঢাকায় ওয়াসা কিংবা খোলা স্থানের পানিতে ভরসা নেই নগরবাসীর। এজন্য বোতলজাত পানির কদর রাজধানীতে সবসময়ই বেশি। কিন্তু বোতলজাত পানির ওপর মানুষের আস্থাকে পুঁজি করে ধোঁকাবাজিতে মেতে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। সেখানে পরিশোধন ছাড়াই নোংরা ও নন-ফুড গ্রেড জারে ভর্তি করে ড্রিংকিং ওয়াটার হিসেবে বিক্রি বা বিতরণ করছে তারা।

এদিকে সম্প্রতি বিএসটিআইর সার্ভিল্যান্স টিম দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত ৬৩টি ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনকারী কারখানা পরিদর্শন করা করেছে। এর মধ্যে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। অবশিষ্ট ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। এ ছাড়া আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান উৎপাদনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তারা পানি যথাযথভাবে পরিশোধন না করেই নোংরা ও নন-ফুড গ্রেড জারে ভর্তি করে ড্রিংকিং ওয়াটার হিসেবে বিক্রি বা বিতরণ করছে। এজন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত শিল্প মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির অষ্টম বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়।

বিএসটিআইর তথ্য মতে, রাজধানীতে প্রতিদিন নানা ব্র্যান্ডের বোতলজাত পানি বিক্রি হয় প্রায় পাঁচ কোটি লিটার। জারজাত মিনারেল ওয়াটার বিক্রি হয় ১৫ কোটি লিটার। জারজাত পানির বেশির ভাগই নকল। রাজধানীর কয়েক কোটি মানুষ এ পানির ক্রেতা। নিরাপদ ভেবে মানুষ এসব জারজাত পানি কিনে পান করলেও প্রকৃতপক্ষে ঘটছে উল্টোটা। বিশুদ্ধ না হওয়ায় এ পান পানি করে বেশির ভাগ মানুষই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, মানুষের শরীরে পানি দ্বারা সহজেই কোনো রোগ সংক্রমিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে দূষিত পানি পান করে মানুষ সহজেই টাইফয়েড, ডায়রিয়া, আমাশয়, জন্ডিসসহ পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনকি শিশুদের মৃত্যু পর্যন্ত ঘটছে। বেসরকারি হিসাব মতে, প্রতিদিন গড়ে পাঁচ শতাধিক রোগী মহাখালী আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিডিআরবি) হাসপাতালে ভর্তি হয়। এদের মধ্যে ৩৫ থেকে ৪০ শতাংশই ডায়রিয়া বা কলেরার রোগী। আবার ভর্তি হওয়া রোগীদের ৪০ শতাংশই শিশু। ডায়রিয়া বা কলেরা পানিবাহিত রোগ।

এর আগে সংসদীয় কমিটি মিনারেল ওয়াটার উৎপাদনকারী কারখানাগুলো সঠিকভাবে বিশুদ্ধ পানি বোতলজাত না করলে তাদের কারখানা বন্ধ করার সুপারিশ করে। এ ছাড়া লাইসেন্সবিহীন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলে। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন চায় সংসদীয় কমিটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব বর্তমানে অন্যত্র বদলি মো. আবদুল হালিম জানান, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর হতে ২০২০ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কর্তৃক সার্ভিল্যান্স টিম গঠনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লাইসেন্সপ্রাপ্ত মোট ৬৩টি ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনকারী কারখানা পরিদর্শন করা হয়। এর মধ্যে ৪৩টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। অবশিষ্ট ২০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের বিশুদ্ধ ড্রিংকিং ওয়াটার উৎপাদনের সক্ষমতা নেই। কোনো কোনো প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনের যন্ত্রপাতি থাকলেও তারা পানি যথাযথভাবে পরিশোধন না করেই নোংরা ও নন-ফুড গ্রেড জারে ভর্তি করে ড্রিংকিং ওয়াটার হিসেবে বিক্রি-বিতরণ করছে। এজন্য শাস্তিমূলক ব্যবস্থা হিসেবে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সচিব জানান, এর মধ্যে ইকো ড্রিংকিং ওয়াটার বিএসটিআইয়ের নির্দেশ অমান্য করে পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত অব্যাহত রাখায় মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে কারখানাটি সিলগালা করা হয়। এ ছাড়া ১১টি প্রতিষ্ঠানের পানি বিশুদ্ধকরণের সক্ষমতা রয়েছে তবে পরীক্ষণের ক্ষেত্রে কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি রয়েছে। উক্ত ক্রটি-বিচ্যুতি সংশোধন করে বিএসটিআইকে অবহিত করার জন্য উৎপাদনকারীকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ক্রুটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ক্রয়-বিতরণ বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সচিব আরও জানান, লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স গ্রহণের পর মানসম্পন্ন পণ্য বাজারজাত করছে কি-না তা যাচাইয়ের লক্ষ্যে সাইল্যান্স টিমের মাধ্যমে খোলাবাজার কারখানা থেকে ব্ল্যানডম ভিত্তিতে ৪৩টি নমুনা সংগ্রহ করে বিএসটিআইয়ের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ২৭টি পণ্যের পরীক্ষণ প্রতিবেদন পাওয়া গেছে এবং অবশিষ্ট ১৬টি নমুনা পরীক্ষাধীন রয়েছে। প্রাপ্ত প্রতিবেদনের মধ্যে ২৩টি মানসম্মত এবং চারটি নিম্নমানের পাওয়া গেছে। নিম্নমানের ৪টি প্রতিষ্ঠান মান উন্নয়ন না করা পর্যন্ত পণ্য বিক্রি-বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সংসদীয় কমিটির সভাপতি আমির হোসেন আমু বলেন, বিএসটিআইয়ের সব কার্যক্রম মিডিয়ায় এবং প্রেসে দেওয়ার জন্য বলা ছিল। এটা যেন যথাযথভাবে পালন করা হয়। সময় সময় জনগণকে জানাতে হবে।

ট্যাগ :