আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
চীনের ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান সিনোভ্যাক বায়োটেক-এর করোনা টিকার ট্রায়ালে ইতিবাচক ফল মিলেছে। ১৪ জুন রবিবার প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ইতোমধ্যেই তাদের প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সম্পন্ন হয়েছে। ১৪ দিনের ব্যবধানে দুই ট্রায়াল সম্পন্ন হয়। প্রাথমিকভাবে দু’টিতেই ইতিবাচক ফল পাওয়া গেছে।
প্রতিষ্ঠানটির তরফে বলা হয়েছে, করোনাভ্যাক নামের তাদের এ টিকা মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় ভালো ভূমিকা পালনে সক্ষম। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে এটি দুই সপ্তাহের মধ্যে শরীরে কার্যকর অ্যান্টিবডি তৈরিতে সমর্থ হয়েছে।
দুই ধাপের এই ট্রায়ালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ৭৪৩ জন স্বাস্থ্যবান স্বেচ্ছাসেবী। এর মধ্যে প্রথম ধাপে ছিলেন ১৪৩ জন আর দ্বিতীয় ধাপে ৬০০ জন। তাদের সবার বয়স ১৮ থেকে ৫৯ বছরের মধ্যে। এতে ৯০ ভাগ মানুষের শরীরে কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
সিনোভ্যাক বলছে, ট্রায়ালে কার্যকারিতা প্রমাণিত হওয়ায় ব্যাপকভিত্তিক উৎপাদনে যেতে এখন শুধু কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্রের অপেক্ষায় রয়েছে তারা। অনুমতি পেলে করোনা মোকাবিলায় বছরে ১০ কোটি ডোজ করোনাভ্যাক উৎপাদনের জন্য তাদের প্রস্তুতি রয়েছে।
২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লুর টিকা বাজারজাত করে আলোচনায় আসে সিনোভ্যাক বায়োটেক। তখন প্রথম কোনও ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি হিসেবে এ টিকা বাজারে আনতে সক্ষম হয় প্রতিষ্ঠানটি।
উল্লেখ্য, করোনার টিকা উন্নয়নের জন্য বর্তমানে দুনিয়াজুড়ে দুই ডজনেরও বেশি গবেষণা চলছে। ইতোমধ্যেই করোনা টিকার ৪০ কোটি ডোজ প্রি-অর্ডার করতে একটি ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাথমিক চুক্তিতে উপনীত হয়েছে ইউরোপের চার দেশ। দেশগুলো হচ্ছে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস। যুক্তরাজ্যের খ্যাতনামা অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত এ টিকা বাজারজাত করতে কাজ করে যাচ্ছে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান আস্ট্রাজেনেকা। এ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গেই চুক্তিতে উপনীত হয়েছে চার দেশের জোট ইনক্লুসিভ ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (আইভিএ)।
চুক্তি অনুযায়ী, এ টিকা ইউরোপে সরবরাহের কাজে সহায়তা দেবে জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও নেদারল্যান্ডস।
করোনা মহামারির এই সময়ে কোনও ধরনের মুনাফা ছাড়াই অক্সফোর্ডের এ টিকা সরবরাহের অঙ্গীকার করেছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
জার্মান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সবকটি দেশ এই টিকা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। টিকার ডোজ প্রস্তুত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জনসংখ্যা অনুযায়ী দেশগুলোতে এটি বিতরণ করা হবে। আশা করা হচ্ছে, ২০২০ সালের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটির উন্নয়নকাজ বা বাজারজাতের প্রস্তুতি সম্পন্ন হবে। সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস, ডিডব্লিউ।