আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস প্রথম যেখানে শনাক্ত হয়েছিল, চীনের সেই উহান শহরের প্রায় ১০ লাখ বাসিন্দা ফের লকডাউনের কড়াকড়িতে আটকা পড়েছেন।
উপসর্গবিহীন চার কোভিড রোগী শনাক্ত হওয়ার পর কর্তৃপক্ষ জিয়াংসিয়া এলাকার বাসিন্দাদেরকে তিন দিন বাড়ির মধ্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।
কোনো এলাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কেউ শনাক্ত হলেই চীন ‘শূন্য কোভিড’ নীতি কার্যকরে নামে; শুরু হয় গণশনাক্তকরণ পরীক্ষা, কঠোর আইসোলেশন ও স্থানীয় পর্যায়ে লকডাউনের বিধিনিষেধ প্রয়োগ।
এসব কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের তুলনায় চীনে কোভিড মহামারীতে কম মৃত্যু দেখা গেছে। কিন্তু এই ‘শূন্য কোভিড’ নীতির কারণে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মানুষের চলাফেরা দীর্ঘদিন বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকে থাকায় এর বিরুদ্ধে অসন্তোষও ক্রমেই বাড়ছে।
দুই দিন আগে এক কোটি ২০ লাখ বাসিন্দার শহর উহানে নিয়মিত শনাক্তকরণ পরীক্ষায় উপসর্গবিহীন দুই কোভিড রোগী মেলে। তাদের সংস্পর্শে আসা আরও দুইজনের দেহে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যাওয়ার পরপরই লকডাউনের নির্দেশনা জারি হয়।
২০২০ সালের একেবারে শুরুর দিকে বিজ্ঞানীরা নতুন করোনাভাইরাস শনাক্ত করার পর উহান বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পায়; কোভিড মোকাবেলায় কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ হওয়া বিশ্বের প্রথম শহরও এটি।
প্রথমদিকে শহরটিতে আরোপিত বিধিনিষেধের মাত্রা বিদেশিদের স্তম্ভিত করলেও পরের দিকে অসংখ্য দেশ ও শহর একই পথ অনুসরণ করে।
কঠোর এ বিধিনিষেধের মাধ্যমেই চীন কোভিড মোকাবেলায় সফলতার নজির গড়ে, তারা বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় আগেভাগে বিধিনিষেধ তুলেও নিয়েছিল।
বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো ভাইরাসকে সঙ্গী করে জীবনধারণের পরিবর্তে ‘শূন্য কোভিড’ কৌশল নেওয়ায় চীনকে অবশ্য এর পরেও স্থানীয় পর্যায়ে বার বার লকডাউন দিতে হচ্ছে।
চীনের অর্থনৈতিক রাজধানী সাংহাই জুনে টানা দুইমাসের লকডাউন থেকে মুক্তি পেলেও শহরটির প্রায় সোয়া দুই কোটি বাসিন্দাকে এখন নিয়মিত শনাক্তকরণ পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার ‘নতুন বাস্তবতার’ সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হচ্ছে।
কোভিড পুরোপুরি নির্মূলের লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্য অসংখ্য চীনা কোম্পানি ও কারখানাকে ‘ক্লোজড লুপ সিস্টেম’ বজায় রাখতে হচ্ছে। অর্থনীতি চালু রাখতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মীদেরকে কর্মক্ষেত্রেই অস্থায়ীভাবে বসবাস করতে বলা হয়েছে।