ডাঃ নুসরাত সুলতানা:
শুরু হয়ে গেছে শীতের আবহাওয়া। পরিবর্তিত এই আবহাওয়ার প্রভাব সবার আগে পড়ে আমাদের ত্বকে। শীতের শুরুতে সাধারণত ত্বক হয়ে পড়ে খুব শুষ্ক। এছাড়া ত্বকের আর্দ্রতা কমে গিয়ে উজ্জ্বলতা কমে যাওয়া, ঠোঁট ফাটা, পায়ের গোড়ালী ফাটাসহ নানাবিধ সমস্যা দেখা দেয়। তাই এই সময় ত্বকের প্রয়োজন বাড়তি যত্ন।
শীতে শরীরের অন্যান্য অংশ ঢাকা থাকলেও শীতের হাওয়ার সংস্পর্শে বেশি আসে আমাদের মুখ। তাই মুখ হাল্কা ক্লিনজার বা ফেসয়াশ, (যার পি এইচ লেভেল কম) দিয়ে ধুয়ে ভারী ও অয়েল বেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ফেসওয়াশ নির্বাচন করুন, যাতে স্প্রিং ওয়াটার থাকে বা ত্বকের উপযোগী। যাদের ত্বক তৈলাক্ত ও ব্রণের সমস্যা আছে তাদের মেডিকেটেড ক্লিনজার ও ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে ত্বকের উপযোগী ৫০ বা ততোর্দ্ধ এসপিএফ যুক্ত সানব্লক।
শীতের আরও একটি প্রধান সমস্যা ঠোঁট ফাটা। কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে, নরম টুথ ব্রাশ দিয়ে ঠোঁট ঘষে পরিষ্কার করে পেট্রোলিয়াম জেলি বা ভেসলিন ব্যবহার করতে হবে। শীতের সময় কম বেশি সবারই পায়ের গোড়ালি ফাটে। তাই এ সময় সপ্তাহে অন্তত একদিন কুসুম গরম পানিতে অল্প গোলাপজল ও ২/৩ ফোঁটা শ্যাম্পু দিয়ে ১০ মিনিট পা ভিজিয়ে রাখুন। এরপর পিউমিস স্টোন দিয়ে পা ঘষে, নরম কাপড় দিয়ে মুছে পায়ে নিয়মিত গ্লিসারিন বা পেট্রোলিয়াম জেলি লাগান।
হাতের যত্নে প্রতিদিন গোসলের পর ও ঘুমাতে যাবার আগে ময়েশ্চারাইজার লোশন লাগান। গোলাপ জলের সাথে সম পরিমাণ গ্লিসারিন মিশিয়ে বোতল ভরে রেখে দিন। এটা প্রতিদিন হাতে, পায়ে ও শরীরে লাগান। খুব ভাল ময়েশ্চারাইজার এই মিশ্রণটি।
শীতে শরীর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। নিয়মিত গোসল করবেন। বাহ্যিক আর্দ্রতার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য প্রচুর পানি পান করতে হবে। সঙ্গে প্রতি দিনের খাদ্য তালিকা করতে হবে প্রচুর মৌসুমি শাক-সবজি ও রঙিন ফল সমৃদ্ধ। এছাড়াও ভিটামিন ই, এস্টাজেন্থিন, গ্লুটাথায়ন, কোলাজেন, বায়োটিন, ভিটামিন সি, প্যানটোথেনিক এসিড, ওমেগা থ্রি, ইভেনিং প্রিমরোজ সমৃদ্ধ সাপ্লিমেন্ট ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী আপনার প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্টটি গ্রহণ করুন।
পরামর্শেঃ
ডাঃ নুসরাত সুলতানা উর্মী
ক্লিনিকাল, কস্মেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এন্ড লেজার স্পেশালিষ্ট।