কক্সবাজার প্রতিনিধি:
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বর্তমানে এই জেলায় ৫৫৩ জন এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের বেশির ভাগ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর। এ কারণে এইডস ঝুঁকিতে রয়েছে স্থানীয়রাও। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের এইচআইভি ট্রিটমেন্ট সেন্টার এবং ইউনিসেফ পরিচালিত প্রিভেনশন অব মাদার টু চাইল্ড ট্রান্সমিশন অব এইচআইভি (পিএমটিসিটি) সেন্টার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র জানিয়েছে, এইডস আক্রান্তদের মধ্যে সদর হাসপাতালে ৩২৫ জন, উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১২২ জন এবং পিএমটিসিটিতে ১০৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে। ২০১৮ সালে এইডস রোগীর সংখ্যা ছিল ৪৫৫ জন। গত এক বছরে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ৯৮ জন।
সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মহি উদ্দিন বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা পালিয়ে আসার পর থেকে এইডস রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলছে। বিশেষভাবে স্ক্যান করার মাধ্যমে এইচআইভি পরীক্ষা করা হলে এই রোগীর সংখ্যা আরও বাড়বে। স্থানীয় জনগোষ্ঠীতে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
হাসপাতালের এইচআইভি ট্রিটমেন্ট সেন্টারের বরাত দিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘চলতি বছর শুধুমাত্র নভেম্বর মাসে ১৯ জন এইডস রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১ জন বাংলাদেশ এবং ১৮ জন রোহিঙ্গা।’
পিএমটিসিটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘আমাদের এখানে চিকিৎসাধীন ১০৬ জন এইডস আক্রান্ত রোগীর সবাই রোহিঙ্গা গর্ভবতী নারী। গত এক মাসে ২৯ জন গর্ভবতী নারীর শরীরে এইচআইভি শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন রোহিঙ্গা নারী এবং ৩ জন বাংলাদেশি নারী।’
কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. আবদুল মতিন বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের কারণে এইডস রোগীর সংখ্যা বাড়ছে কক্সবাজারে। চিকিৎসা নিতে আসা বেশির ভাগ রোগী রোহিঙ্গা। এইডস থেকে উত্তরণে স্থানীয়ভাবে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। তা না হলে শুধু কক্সবাজার নয়, পুরো দেশে ছড়িয়ে যেতে পারে এই মরণব্যাধি।’
কক্সবাজার পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল জানিয়েছেন, এই মরণব্যাধি থেকে রক্ষা পেতে হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের চলাফেরার ওপর দৃষ্টি রাখতে হবে এবং জনসচেতনা বৃদ্ধি করতে হবে।’