ডাঃ নুসরাত সুলতানা (উর্মী):
পি.আর.পি বা Platelet rich plasma হলো আমাদের রক্তের প্রধান ৩ টি কণিকার অন্যতম একটি, প্লেটলেট বা অণুচক্রিকা সমৃদ্ধ রক্তরস। পি.আর.পি তে থাকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গ্রোথ ফ্যাক্টর, যেমন PDGF, TGF, VEGF, IGF, যা কোষের গঠনে ও কোলাজেন তৈরিতে সাহায্য করে। আর এ কারণেই পি.আর.পি এখন উন্নত চিকিৎসার অংশ হিসেবে সারা বিশ্বে অত্যন্ত প্রশংসিত, এবং ব্যবহৃত হয়ে আসছে ত্বকের বিভিন্ন চিকিৎসায়।
👉কিভাবে পি.আর.পি ত্বকের চিকিৎসায় কার্যকরী?
আমাদের ত্বক প্রতিদিনই একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছে বার্ধক্যের দিকে। সাথে আছে পারিপার্শ্বিক দূষিত পরিবেশ, অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, সূর্যের ক্ষতিকর আলো ইত্যাদি নানা কারণ যা ত্বকের সৌন্দর্য ক্ষয়ের পিছনে দায়ী। পি.আর.পি নতুন কোলাজেন তৈরির মাধ্যমে এই ক্ষতি পুষিয়ে আনতে অনেকটাই সক্ষম। পি.আর.পি ত্বকের ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলোকে সংস্কার করে ত্বককে করে তোলে সজীব ও উজ্জীবিত। এতে চেহারায় ফিরে আসে উজ্জলতা, কোমলতা ও তারুণ্য।
👉কী কী রোগে পি.আর.পি করা হয়?
💡এন্টি এজিং (বলিরেখা)
💡ব্রণ ও ব্রণের ক্ষত
💡মেছতা
💡চোখের কালো দাগ
💡ত্বকের উজ্জ্বলতা
💡চুল পড়া রোধ
💡নতুন চুল গজানো
💡ফিলার হিসেবে
এবং আরো অন্যান্য।
👉পি.আর.পি কারা নিতে পারেন?
এই চিকিৎসা এতোটাই নিরাপদ যে, ১৬ বছরের পর যে কেউ এই চিকিৎসা নিতে পারেন। শুধু দেখা হয়, রোগীর হিমোগ্লোবিন এর মাত্রা, রক্তে রক্তকণিকার মাত্রা ভাল পরিমাণে আছে কিনা, এবং অবশ্যই রোগীর কোন দীর্ঘমেয়াদি জীবন বিপন্নকারী রোগ থাকা যাবেনা।
তাছাড়া, যাদের ত্বকে তেমন কোন সমস্যা নেই, তারা তাদের সৌন্দর্য চর্চার রুটিন হিসেবে, সৌন্দর্য ধরে রাখার জন্য পি.আর.পি নিতে পারেন।
👉কীভাবে পি.আর.পি দেয়া হয়?
সর্বোচ্চ কার্যকরীতা পাবার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতিতে পি.আর.পি করা হয়। যেমনঃ
🕯মাইক্রো নিডলিং
🕯ইন্ট্রা ডার্মাল ইঞ্জেকশন
🕯মেসোথেরাপী
🕯আর.এফ (রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি)
🕯টপিক্যাল এপ্লিকেশন ইত্যাদি।
👉পি.আর.পি কি ব্যাথাযুক্ত?
স্বাধারণত পি.আর.পি করার আগে ত্বকে টপিক্যাল এনেস্থেশিয়া বা ব্যাথা নিরোধক ক্রিম দেয়া হয়। তাই চিকিৎসার সময় তেমন ব্যাথা হয় না। চিকিৎসার পরবর্তী ১-৩ দিন ত্বক হাল্কা লাল থাকতে পারে, যা স্বাধারণত ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। এ সময় ত্বক কিছুটা চিটচিটে বা টানটান লাগতে পারে। কারো কারো ৭-১০ দিন পর অল্প চামড়া উঠতে পারে।
চিকিৎসা শেষে ঘন্টা খানেকের ভেতর আপনি ঘরে ফিরতে পারবেন।
চিকিৎসক ঘরে ব্যাবহারের জন্য ঔষধ ও নিয়ম নির্দেশনা দিয়ে থাকেন।
পি.আর.পি বর্তমানে সৌন্দর্য চিকিতসায় অন্যতম আধুনিক ও নিরাপদ ব্যাবস্থা, যা অনেক ক্ষেত্রে কেমিক্যাল পিলিং, মাইক্রোডার্মাব্রেশন, বোটক্স, লেজার ও ফিলারের মতো ব্যায়বহুল চিকিৎসার বিকল্পও বটে।
পরামর্শেঃ
ডাঃ নুসরাত সুলতানা (উর্মী)
ক্লিনিক্যাল, কস্মেটিক ডার্মাটোলজিস্ট এন্ড লেজার স্পেশালিষ্ট।