এম.এইচ মুরাদ:
সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ পরিবার। পরিবার ছাড়া কোনোভাবেই মানুষের অস্তিত্ব কল্পনা করা যায় না। পরিবার ছাড়া অনেকেই হয়ত চলতে পারে কিন্তু পরিবারহীন ব্যক্তির জীবন ততটা সুখকর হয়ে ওঠে না। পরিবার কিভাবে চাহিদা পূরণে সাহায্য করতে পারে আলোচনা করুন। ব্যক্তির বিকাশ, মানসিকতা, ভালোবাসা, রাগসহ অনেক কিছুতেই পরিবার প্রভাবকের ভূমিকা পালন করে। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা যায়, পরিবারের সঙ্গে খারাপ সম্পর্ক থাকলে তা ব্যক্তির স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে।
সম্প্রতি পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ব্যক্তিগত জীবনে কতটা প্রভাব ফেলে, তা জানতে একটি সমীক্ষা পরিচালিত হয়। সমীক্ষাটির প্রধান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের সহযোগী অধ্যাপক সারারাহ বি উডস বলেন, আমরা দেখেছি পরিবারের আবেগঘন পরিবেশ ব্যক্তির স্বাস্থ্যে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এছাড়া ২০ বছর পার হয়ে যাওয়ার পর তার স্ট্রোক হতে পারে এবং এটি মাথা ব্যথাতেও প্রভাব ফেলে।
জার্নাল অব ফ্যামিলি সাইকোলজিতে প্রকাশিত ওই সমীক্ষায় ২ হাজার ৮০২ জন ব্যক্তির তথ্য উঠে এসেছে। তিন দফায় নেয়া তথ্যে গড়ে ৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিরা অংশ নেয়। এতে পরিবারের বন্ধন ও সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন করা হয়।
গবেষকেরা এতে দেখতে পান, যাদের পারিবারিক বন্ধন বেশ শক্তিশালী, তারা তুলনামূলকভাবে রোগে কম আক্রান্ত হচ্ছেন। অন্যদিকে, পরিবারের সঙ্গে যাদের সম্পর্ক খারাপ, তারা অধিক মাত্রায় অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বয়স্ক লোকদের মধ্যে যারা রোগাক্রান্ত, তাদের পারিবারিক ইতিহাস খুঁজে দেখা গেছে, প্রত্যেকেই পরিবারের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ জীবনযাপন করছেন না। এদিকে, আরেকদল গবেষক বলছেন, দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করলে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
ফ্রান্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রতি বছর কমপক্ষে ৫০ দিন যদি ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ করা হয় তাহলে স্ট্রোকের ঝুঁকি তৈরি হয়।এক দশকেরও বেশি সময় যাবত যারা দীর্ঘ সময় কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে স্ট্রোকে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি।তবে যুক্তরাজ্যের স্ট্রোক এসোসিয়েশন বলছে, দীর্ঘ সময় কাজ করলেও শারীরিক ব্যায়াম এবং ভালো খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হতে পারে।
স্বাস্থ্যসম্মত জীবনব্যবস্থা বজায় রাখলে স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকখানি কমানো যায়। এ জন্য করণীয় হলো- ধূমপান না করা, ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং কন্ট্রোল করা, নিয়ম করে হাঁটা বা হালকা দৌঁড়ানো, দুশ্চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করা। খাদ্য তালিকায় বেশি পরিমাণে মাছ রাখা মানে লাল মাংসের জায়গা কমে যায়। যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।
ওটমিল:
রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকলে তা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। তাই সর্বপ্রথম আপনার উচিত হবে রক্তে কোলেস্টেরল কমানো। তার জন্য ওটমিল বেশ ভালো। ওটমিলে প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকে যা ক্ষুধা মেটায় কিন্তু ক্যালরি বা কার্বো কম বাড়ায়। তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে আপনি প্রতিদিন ওটমিল খেতে পারেন।
বাদাম:
বলা হয় প্রতিদিন এক মুষ্টি বাদাম আপনাকে কোলেস্টেরল থেকে দূরে সরিয়ে রাখে। তাই কয়েক ধরনের বাদাম মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত এক মুঠ বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। কারণ আপনার কোলেস্টেরল যত কম থাকবে, রক্তচাপও ততটাই কম থাকবে। আর রক্তচাপ কম থাকলে স্ট্রোকের ঝুঁকির পরিমাণও কম থাকবে।
মিষ্টি আলু:
রাতের খাবারে অন্যান্য আইটেমের পাশাপাশি মিষ্টি আলু রাখতে পারেন। এটা অনেক বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। পাশাপাশি মিষ্টি আলুতে প্রচুর পরিমাণে এন্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান রয়েছে। এটা আপনার স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাবে।
কলা:
বেশি পরিমাণে পটাশিয়াম খেলে আপনার রক্তচাপ কমবে। যুক্তরাষ্ট্রে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, পটাশিয়াম বেশি পরিমাণে খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। তবে কাঁচা কলা রক্তচাপ কমাতে আরও বেশি সহায়ক বলে জানিয়েছেন দেশটির চিকিৎসক মিশেল রুথেনস্টাইন। তিনি বলেন, কাঁচা কলা স্ট্রোক প্রতিরোধে সহায়তা করে। তাই হলুদ কলার পরিবর্তে বাজার থেকে সবুজ রঙয়ের কলা কিনতে হবে।
লাউয়ের বীজ:
স্ট্রোক নামের জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম খেলে স্ট্রোকের ঝুঁকি ২২ শতাংশ কমে যায়। লাউয়ের বীজে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম আছে। এ কারণে নিয়ম করে লাউয়ের বীজ খেতে হবে।
পুঁইশাক:
পুঁইশাকে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড রয়েছে। আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনের এক গবেষণা বলছে, এটা উচ্চ রক্তচাপে থাকা ব্যক্তিদের স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। এজন্য একেবারেই সহজলভ্য এই শাক নিয়মিত খান।