মোঃ সেলিম:
প্রবাদ আছে “মুলা শাক আর কচু শাক শরীরে থাকে না কোনো খাদ”। মুলা শাক স্বাস্থ্য অটুট রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেহকে নানা রোগের হাত থেকে বাঁচিয়ে রাখে। নিয়মিত মুলা ও মুলা শাক খেলে শরীরের নানা দোষ কমে যায়। শীতকাল নানা শাক সবজির ভরপুর মৌসুম। এসময়ে বাজারে টাটকা তরতাজা নানা সবজি ও তরকারি পাওয়া যায়। দামেও সস্তা। শীত মৌসুমের শাক সবজির মধ্যে মুলা একটি অতি পরিচিত সবজি। যার যথেষ্ট পুষ্টি ও ঔষধী গুণ রয়েছে। মুলা এমন একটি সবজি যার সমস্ত অংশই খাওয়া যায়। এটি কাঁচা অবস্থায় তরকারি এবং পাতা শাক হিসেবে রান্না করে খাওয়া যায়। মুলা উদ্ভিদ জগতের ক্রসিফেরি পরিবারের উদ্ভিদ। আমাদের দেশে মুলার রং সাদা এবং লাল হয়। পুষ্টি মানের দিক দিয়ে দুইটি সমান। লৌহ, ক্যালসিয়াম ও সোডিয়ামের একটি ভালো উৎস মুলা। মুলার পাতা শাক হিসেবে আর মূল সবজি হিসেবে খাওয়া হয়। তবে মুলা পাতার পুষ্টি উপাদান বেশি। এতে ৯৫ ভাগই পানি। এতে খুব কম পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং কোলেস্টেরল থাকে। আমাদের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ সমৃদ্ধ মুলায় পটাসিয়াম, ভিটামিন সি, ফোলেট, আঁশ, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ম্যাগনেসিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম যথেষ্ট পরিমানে পাওয়া যায়। মুলাতে রয়েছে সিসটিন সমৃদ্ধ প্রোটিন এর নির্যাস। যা হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে দেয়। মুলাতে আছে ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করার মতো উপাদান। মুলা আমাদের শরীরের বিভিন্ন ক্যান্সার প্রতিরোধে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে। মুলা হজম শক্তি বৃদ্ধিকারক, শীতল কারক, মূত্রকারক। মুলা আমাদের চোখের দৃষ্টিশক্তি ও চামড়ার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। আলসার ও বদহজম দূর করতে সাহায্য করে। কিডনি ও পিত্ততলিতে পাথর তৈরি প্রতিরোধ করে। যকৃতের প্রদাহ, জন্ডিস হলে মুলা বেশ উপকার সাধন করে। এছাড়া মুলা মুখের রুচি বাড়িয়ে ক্ষুধা বৃদ্ধি করে। মুলা দেহের অর্শ্ব রোগ বা পাইলস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে খুবই উপকার সাধন করে।
ঔষধী গুণ : টাটকা মুলার রস অর্শ নিরাময়ের একটি কার্যকর খাদ্য ঔষধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যারা অর্শ রোগে ভুগছেন তারা টাটকা মুলার রস ৬০-৯০ মিলিলিটার মাত্রায় সকাল বিকাল উপকার পাবেন।
যারা জ্বরে ভুগছেন তারা নিয়মিত পরিমাণে মুলা খান জ্বর কমে আসবে মুখের রুচিও বাড়বে। জ্বর সারার গুণ মুলাতে আছে।