স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাংলাদেশসহ বিশ্বের কোনো দেশের নাগরিকই এবার আর হজে অংশ নিতে পারছেন না। সৌদি আরবে অবস্থানরত বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা এ মৌসুমে হজে অংশ নিতে পারলেও সেই সংখ্যা হবে সীমিত।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সৌদি সরকার। সৌদি আরবের হজ্ব ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় সোমবার (২২ জুন) রাতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ওমরা পালনও ইতিমধ্যে স্থগিত করা হয়েছে পবিত্র স্থান ও হজ্বযাত্রীদের সুরক্ষার জন্য।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জমায়েত হজ্ব চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৩০ জুলাই অর্থাৎ ৯ জিলহজ্ব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। গত বছর প্রায় ২৫ লাখ মানুষ হজ পালন করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ১৮ লাখই বিভিন্ন দেশ থেকে হজ পালন করতে যান।
সৌদি আরবের স্বীকৃতি না থাকায় ১৯৭৪ সালের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের নাগরিকদের সরাসরি পবিত্র হজ্ব পালনে বাধা ছিল। তাদের লিবিয়া হয়ে হজ্ব পালনে যেতে হতো। ১৯৭৪ সালে ইসলামিক দেশগুলোর সম্মেলন (ওআইসি) এ অংশ নিয়ে বাংলাদেশের হজ্বযাত্রীদের জন্য সরাসরি হজ্ব পালনের ব্যবস্থা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৪ সালের পর এই প্রথম বাংলাদেশের নাগরিকরা হজ্বে অংশ নিতে পারছেন না।
এ বছর বাংলাদেশ থেকে মোট ১ লাখ ৩৭ হাজার ১৯৮ জনের হজে যাওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি হজ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল। এবার বাংলাদেশ থেকে ৬৪ হাজার ৫৯৪ জন হজ্বে যেতে আগ্রহী ছিলেন। সৌদি সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণে তাদের হজ্বে যাওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহও। সদ্য প্রয়াত এই প্রতিমন্ত্রী একাধিকবার জানিয়েছিলেন, যারা এবার হজ্বে যেতে পারবেন না, আগামী বছরের জন্য অগ্রাধিকার পাবেন। কেউ আগামী বছর যেতে না চাইলে টাকা ফেরত পাবেন। সৌদি সরকারও একই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল।
সোমবার নাগাদ বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৯০ লাখ এবং সৌদি আরবে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যাওয়ার পর সীমিত পরিসরে হজ্বের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত এল।
সৌদি আরবের হজ্ব ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে করোনভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বাড়ছে। এমনকি এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক বের হয়নি। এই অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখো হাজিদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। সে জন্যেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।