স্টাফ রিপোর্টারঃ
ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শনিবার (১ অক্টোবর) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বাঙালি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, বুধবার বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনের এ মহোৎসব।
পূরাণ মতে, দুর্গাপূজার সঠিক সময় হলো- বসন্তকাল। কিন্তু বিপাকে পড়ে রামচন্দ্র, রাজা সুরথ ও বৈশ্য সমাধি বসন্তকাল পর্যন্ত অপেক্ষা না করে শরতেই দেবীকে অসময়ে জাগ্রত করে পূজা করেন। সেই থেকে অকাল বোধন হওয়া সত্ত্বেও শরতকালে দুর্গাপূজার প্রচলন ঘটে।
এদিকে, পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি নেওয়া শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা ও শংখের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। রামকৃষ্ণ মিশনের নির্ঘণে্ট বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে সায়াংকালে কল্পারম্ভ ও বোধন আমন্ত্রণসহ অধিবাসের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠী পূজা সম্পন্ন হবে। এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত থাকবে সব মণ্ডপ এলাকা।
উৎসবের দ্বিতীয় দিন রোববার (২ সেপ্টেম্বর) মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ৩০মিনিটে। সোমবার (৩ সেপ্টেম্বর) মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ও বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে সোমবার বিকেল ৪টা ৪৪ মিনিটে ও সমাপন বিকেল ৫টা ৩২ মিনিটের মধ্যে।
মঙ্গলবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পুষ্পাঞ্জলি সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে। পরদিন বুধবার সকাল ৬ টা ৩০ মিনিটে দশমী পূজা আরম্ভ, পুস্পাঞ্জলি সকাল ৮টায়। পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যা-আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সব আয়োজন।
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক চন্দ্রনাথ পোদ্দার বলেন, এবছর সারাদেশের ৩২ হাজার ১৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপন হবে। গত বছর সারাদেশের পূজামণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৩২ হাজার ১১৮টি। ঢাকা মহানগরে মণ্ডপের সংখ্যা ২৪১টি, যা গত বছরের থেকে ছয়টি বেশি।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র্যাবসহ অন্য আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। পাশাপাশি প্রায় প্রতিটি মণ্ডপেই সনাতন ধর্মাবলম্বীদের স্বেচ্ছাসেবক দল নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় পূজা উৎসব হিসেবে পরিচিত এ মন্দিরের মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সংগীতানুষ্ঠান, বস্ত্র ও মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছায় রক্তদানসহ বিজয়া শোভাযাত্রা করা হবে।