মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ৩ মে ২০২৪ ২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পবিত্র মসজিদ আল আকসার ইতিহাস ও আদ্যোপান্ত


প্রকাশের সময় :১২ অক্টোবর, ২০২৩ ১১:৩৬ : পূর্বাহ্ণ

মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল আজিজ:

মুসলমানদের প্রথম কিবলা মসজিদুল আল আকসা। মক্কা, মদিনার পরে ইসলামের তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থান। এটিই পৃথিবীতে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ। মেরাজের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম মক্কা থেকে প্রথমে মসজিদে আকসায় আগমন করেন।

কোরআনের একাধিক স্থানে আল আকসাকে বরকতময় এবং পবিত্র ভূমি বলা হয়েছে। অসংখ্য নবী রাসূলের স্মৃতিধন্য এ পূণ্যভূমি দীর্ঘকাল ইসলামি শিক্ষা, সভ্যতা এবং সংস্কৃতির অত্যতম প্রধান কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত ছিল। আইয়ূবী সুলতানদের নির্মিত ঐতিহাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মুসলিম শাসকদের অনেক স্মৃতিচিহ্ন ধারন করে আছে আল আকসার পূণ্যভূমি।

ভারত স্বাধীনতার অগ্রনায়ক এবং খেলাফত আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মাওলানা মোহাম্মদ আলী জওহরসহ অনেক কীর্তিমান ব্যক্তিত্ব সমাহিত আছেন জেরুসালেমের এ পবিত্র মাটিতে।

আল আকসা কমপ্লেক্স

প্রায় ১৪ হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত আল আকসা কমপ্লেক্স একক কোনো স্থাপনা নয়। চার দেয়াল বেষ্টিত এ কমপ্লেক্সে মসজিদ, মিনার মেহরাব ইত্যাদি মিলিয়ে ছোট বড় প্রায় দুইশত ঐতিহাসিক স্থাপনা রয়েছে।

১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে পরাজয়ের মধ্য দিয়ে আল আকসার নিয়ন্ত্রণ হারায় মুসলমানরা। এর আগে এটি জর্ডানের শসকদের কর্তৃত্বাধীন ছিল। বর্তমানে আকসা কমপ্লেক্স ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও মসজিদ পরিচালিত হয় জর্ডান-ফিলিস্তিনের একটি ওয়াকফ প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে। যদিও এর প্রবেশপথগুলোতে মোতায়েন করা থাকে ইহুদি দখলদার সেনারা। তারা অনেক তল্লাশির পরে মুসল্লিদেরকে মসজিদে আকসায় প্রবেশ করতে দেয়।

আল আকসা নির্মাণের ইতিহাস

নির্মাণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং রাজনৈতিক কারণে কয়েক দফা ধ্বংস এবং পুনঃনির্মাণের মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে বর্তমানের আল আকসা কমপ্লেক্স। তাই আল আকসার নির্মাণ ইতিহাস দুই পর্বে আলোচনা করা হয়। ইসলাম পূর্ব যুগ। ইসলাম পরবর্তী যুগ।

আল আকসা পৃথিবীতে নির্মিত দ্বিতীয় মসজিদ। মক্কায় মসজিদুল হারাম নির্মাণের ৪০ বছর পরে এই মসজিদ নির্মাণ করা হয়। প্রথম কে আল আকসা নির্মাণ করেন তা নিশ্চিত করে জানা না গেলেও এ ব্যাপারে ঐতিহাসিকদের তিনটি মত পাওয়া যায়।

কেউ বলেন, এই মসজিদের প্রথম নির্মাতা হলেন আদিপিতা হজরত আদম আলাইহিস সালাম। কেউ বলেন, নুহ আলাইহিস সালোমের সন্তান সাম এই মসজিদের আদি নির্মাতা। আবার কারো মতে, হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম প্রথম এই মসজিদের ভিত্তি নির্মাণ করেন।

নবীদের যুগে আল আকসা

আধুনিক গবেষকরা হজরত আদম আলাইহিস সালামকে এই মসজিদের প্রথম নির্মাতা বলে মতামত দিয়েছেন। নূহ আলাইহিস সালামের মহাপ্লাবনে ধ্বংস হওয়ার পরে হজরত ইবরাহিম আলাইহিস সালাম এর পুনঃনির্মাণ করেন। পরবর্তীতে তার বংশধররা এই মসজিদের পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করেন। কালের পরিক্রমায় হজরত মুসা আলাইহিস সালামেরসহ অনেক নবী এই মসজিদের সংস্কার কাজ কাজ করেন। হজরত দাউদ ও সুলাইমান আলাইহিস সালামের সময় পর্যন্ত অনেক সংযোজনের মধ্য দিয়ে মসজিদুল আকসা বিস্তৃত কম্পাউন্ডে রূপান্তরিত হয়।

সুলাইমান আলাইহিস সালাম আকসা চত্বরে একটি আলীশান ভবন নির্মাণ করেন। যেটিকে হায়কালি সুলাইমানি বলা হতো। পরবর্তী সময়ে ধর্ম বিকৃতকারী ইহুদিরা এটিকে তাদের মন্দির হিসেবে গ্রহণ করে। তারা এটির নাম দেয় সলেমন ট্যাম্পল।

খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দী ব্যবিলনের বাদশাহ বুখতে নাসর এই কম্পাউন্ডে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। হায়কালে সুলাইমানিকে সে গুড়িয়ে দেয়। নবীদের স্মৃতিস্মারকগুলোকে লুট করে নিয়ে যায়।

এ ঘটনার ৭০ বছর পর খ্রিস্টপূর্ব ৩৮০ সালে তৎকালীন ইরানের সম্রাট বাবেল শহর জয় করেন। তার আনুকূল্যে ইহুদিরা আবারও বায়তুল মুকাদ্দাসের দখল নেয়। আবারও তারা ‘সলেমন ট্যাম্পল’ পুননির্মাণ করে। এটিকে তারা সেকেন্ড ট্যাম্পল নাম দেয়।

খৃস্টানদের দখলে আল আকসা

৯৮ বছর পরে গ্রিক সম্রাট অ্যারোটেনিস গোটা ফিলিস্তিন দখল করে সলেমন ট্যাম্পলকে গ্রীক উপাসনালয়ে পরিণত করে। পরবর্তী সময়ে ৩১২ খ্রিস্টাব্দে রোম সম্রাট কনস্টান্টিনোপল খ্রিস্টধর্মে দীক্ষিত হলে জেরুসালেমে খ্রিস্টানদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়। তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী আল আকসা কমেপ্লেক্সেই ‘যিশুকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল’। ফলে এখানে তারা একটি গির্জা প্রতিষ্ঠা করে।

এসময় বহু নবী এবং আল্লাহর প্রতিনিধিকে হত্যাকারী ইহুদি সম্প্রদায় ভূমিহীন এবং আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে। কোরআনে ঘোষিত ইহুদি জাতির প্রতি লাঞ্চনার প্রতীক হিসেবে আধুনিক ইসরায়েল প্রতীষ্ঠার আগ পর্যন্ত তারা ভূমিহীন থাকে।

ইসলাম পরবর্তী যুগ

মেরাজের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের আল আকসায় আগমনের মধ্য দিয়ে ইসলামি যুগের সূচনা হয়। হিজরী ১৪ সালে খলীফা ওমর রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ফিলিস্তিন বিজয়ের পরে প্রথমে এখানে মসজিদে ওমর নির্মাণ করেন। এরপর ৭২ হিজরি মোতাবেক খ্রিস্টিয় ৬৯১ সালে উমাইয়া খলিফা আবদুল মালিক বিন মারওয়ান সেখানে নির্মাণ করেন অষ্টকোণাকৃতির ঐতিহাসিক কুব্বাতুস সাখরা বা সোনালী গম্ভুজ। এর ভিতরে একটি পাথর আছে, এই পাথরকে কেন্দ্র করে এই গম্ভুজ নির্মাণ করা হয়েছে। ইহুদি বিশ্বাস মতে এটি পৃথিবীর ফাউন্ডেশন স্টোন।

কুব্বাতুস সাখরায় ইসলামি স্থাপত্যের প্রাচীন নমুনার নকশা মেলে। অষ্টকোণাকৃতির বেজমেন্ট থেকে কথিত স্বর্ণ খচিত গম্ভুজের উচ্চতা বিশ মিটার।

ট্যাগ :