স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় বৌদ্ধ বিহার স্থাপনের নামে ভিক্ষু শরণংকর কর্তৃক অবৈধভাবে সংরক্ষিত বনভূমি দখল, পাহাড় ও গাছপালা কাটার সমালোচনা করে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ সংগঠনগুলোর নেতৃবৃন্দ।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস-চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়ার স্বাক্ষরে প্রেরিত ও বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সভাপতি ও ঢাকাস্থ কমলাপুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ বুদ্ধপ্রিয় মহাথেরো, বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয় এবং বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের মহাসচিব সাবেক ডিআইজি অমর বড়ুয়া স্বাক্ষরিত তিন পৃষ্ঠার এ বিবৃতিতে এ কর্মকাণ্ডকে তারা বৌদ্ধ ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমর্থনযোগ্য নয় বলে বর্ণনা করেন।
তারা বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের আদর্শ ও বৌদ্ধ ধর্মের মর্মবাণী ‘অহিংসা পরম ধর্ম’। একারণে অবৈধভাবে বন ও অন্যধর্মের উপাসনালয়, শ্মশান দখল ও কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা বৃহত্তর বৌদ্ধ সমাজ কখনোই সমর্থন করে না বরং এহেন কাজ মহামতি বুদ্ধের অহিংসা, করুণা ও মৈত্রীর বাণীকে খর্বকারী, বলেন তারা।
বিবৃতিতে বলা হয়, রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ফলহারিয়া গ্রামের অনতিদূরে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া ২০১২ সালে জ্ঞানশরণ মহারণ্য বৌদ্ধ বিহার স্থাপন করেন ভিক্ষু শরণংকর থেরো। বনবিভাগের বাধানিষেধ সত্ত্বেও ক্রমে ক্রমে বনের আরো জায়গা বিহারের সাথে যুক্ত করা , পাহাড় ও গাছপালা কাটা হলে বনবিভাগ ২০১৮ সালে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। মামলায় ‘ভিন্ন ধর্মের প্রতি বিষোদগারের’ও উল্লেখ ছিল। সুরাহা না হওয়ায় ২০২০ সালের ৯ জুলাই বনবিভাগ ও পুলিশের যৌথ অভিযানে সেখানে সকল অবৈধ স্থাপনার কাজ বন্ধ করা হয় এবং অবৈধ দখলদারিত্ব ও আল্লাহ এবং রাসুলকে অবমাননা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আইডি থেকে উস্কানিমূলক পোস্ট দেয়ার দায়ে আরো ডজনখানেক মামলা হয়।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এর পরপরই কেউ কেউ বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য একে রাজনৈতিক রূপদানের অপচেষ্টা করে। এমতাবস্থায় দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ নেতারা এলাকা পরিদর্শন করেন ও মৈত্রীপূর্ণ অবস্থা বজায় রাখার আহবান জানান। কিন্তু এর অবব্যহিত পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিদেশে অবস্থানকারী বৌদ্ধদের কাছে সরকার, সরকারের বিভিন্ন কর্তাব্যক্তি, তাদের পরিবার এবং কয়েকজন শীর্ষ বৌদ্ধ ভিক্ষুর বিরুদ্ধে বিষোদগার ছড়ানো হয়। এ প্রেক্ষিতে দেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের শীর্ষ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাদের বিবৃতিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের আইনী ব্যবস্থার মাধ্যমেই সমাধানের পক্ষে মতপ্রকাশ করেন।