মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আহলা দরবার শরীফের প্রাণপুরুষ হযরত নূরী বাবা (রহঃ) এর ৪৬তম ওরছ শরীফ ও ইতিহাস


প্রকাশের সময় :১০ ডিসেম্বর, ২০২২ ১:২১ : অপরাহ্ণ

মাঈন উদ্দীন রুবেল:

চট্টগ্রামস্থ বোয়ালখালী থানার আহলা দরবার শরীফ বহু পূর্ব থেকে ইসলাম ও সূফী দর্শনে বিশ্বাসী তরিকতপন্থী মুসলমানদের এক মহা মিলন কেন্দ্র । ইসলাম ধর্মের মহৎ বাণী, শান্তি প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে হযরত শেখ মোহাম্মদ গৌরী (রহঃ) সুদূর বাগদাদ শরীফ থেকে তৎকলীন বাংলা, গৌর রাজ্য হয়ে দীর্ঘ ভ্রমন শেষে ষোড়শ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে বোয়ালখালীর জমিনে তশরীফ আনেন । তাঁরসাধনা এবং শান্তির বাণী প্রচারের ফলে এই অঞলের মানুষ-জন ক্রমশঃ ইসলামের মহান দীক্ষা ও আধ্যাত্নিক দর্শনে জ্ঞান লাভ করে । ধর্মীয় কর্মকান্ড সম্পাদনের জন্য হযরত শেখ মোহাম্মদ গৌরী (রহঃ) ষোড়শ শতাব্দীর শেষ দিকে বর্তমান আহলা দরবার শরীফ প্রাঙ্গনে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন যা এখনও বর্তমান রয়েছে)। সপ্তদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে হযরত শেখ মোহাম্মদ গৌরী (রহঃ) বেছাল প্রাপ্ত হন ।


তাঁর মাজার শরীফ ক্রমে আধ্যাত্নিক সাধনার প্রবিত্র স্থান হিসেবেউল্লেখযোগ্য হয়ে উঠে । কথিত আছে যে হযরত শেখ মোহাম্মদ গৌরী (রহঃ) মদিনা মোনাওয়ারায় হযরত রাসূল আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর রওজা মোবারক জেয়ারত কালে হুজুর পূরনূর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে আরজ করেন যেন, তাঁর বংশের প্রতিটি প্রজন্মেই আউলিয়া কেরামের জন্ম হয়। হযরত গাউছে পাক (রহঃ) এর আওলাদে পাক”শামসুল আরেফীন সৈয়দ সুলতান আহমদ বাগদাদী (রহঃ)” নামের আরেক সূফী সাধক সুদূর বাগদাদ শরীফ হতে সপ্তদশ শতাব্দীর শেষদিকে এই পবিত্র স্থানে আগমন করেন এবং গভীর আধ্যাত্নিক সাধনায় নিমগ্ন হন। জন শ্রুতি আছে যে, সপ্তদশ শতাব্দীর আরো শেষের দিকে জরীপ কর্মীরা এই এলাকায় এসে ধ্যানস্থ সাধক “শামসুল আরেফীন সৈয়দ সুলতান আহমদ বাগদাদী (রহঃ)” এর দর্শন লাভ করেন। তখন তিনি ‘আল্লাহু’ যিকিরে রত ছিলেন।দ্যানমগ্ন অবস্থায় তাঁর দেহ উই পোকার ঢিবি আচ্ছাদিত ছিল। ধ্যানস্থ অবস্থায় তাঁর ‘আল্লাহু’ যিকির অনুযায়ী জরীপকর্মিরা এই অঞ্চলের নাম ‘আল্লাহু’ শব্দের অনুগমনে ‘আহলা’ নিধারণ করেন।

হযরত শেখ মোহাম্মদ গৌরী (রহঃ) এর বেছাল প্রাপ্তির পর তাঁর বংশধরদের মধ্যে যথাক্রমে হযরত শেখ দানু চৌধুরী সাহেব, হযরত শেখ মুনীর চৌধুরী সাহেব, হযরত শেখ আনিস চৌধুরী সাহেব ও হযরত মৌলভী সফর আলী চৌধুরী সাহেব খাদেম হিসেবে আহলা দরবার শরীফ কেন্দ্রে ধর্মীয় ও আধ্যাত্নিক জ্ঞানচর্চা বজায় রাখেন।ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে মৌলভী সফর আলী সাহেব এর ঔরশে কুতুবে জামান জনাব কাজী আছাদ আলী (রহঃ) জন্মগ্রহন করেন।পূর্ব পুরুষদের আধ্যাত্নিক ঐতিহ্যে লালিত হওয়ার কারণে শৈশবে তাঁর মনে গভীর খোদাপ্রেম, সৃষ্টি জিজ্ঞাসা ও ধর্মানুরাগের উন্মেষ ঘটে। মাধ্যমিক শিক্ষার সমাপনান্তে ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে উচ্চশিক্ষার্থে তিনি হিন্দুস্থান গমন করেন। জনাব কাজী আছাদ আলী (রহঃ) চট্টগ্রামের তৎকালীন রাঙ্গুনিয়ায় কাজী (বিচারক) পদে নিয়জিত হন। শৈশবে লালিত খোদা প্রেম ও আধ্যাত্নিক জিজ্ঞাসা দীর্ঘদিন তাকেঁ একজন কাজী হিসেবে আটকে রাখতে পারেনি। জমিদারীর ভোগবিলাসী জীবনও তাকে কখনাও হাতছানি দেয়নি।এসময় তিনি উপমহাদেশখ্যাত মাইজভান্ডার শরীফের গোড়াপত্তনকারী “গাউছুল আজমহ যরত মাওলানা শাহসূফী সৈয়দ আহমদউললাহ (কঃ)” এর আধ্যাত্নিক শিষ্যত্ব লাভ করেন। সাধনা ও রেয়াজতের সু-কঠিন সৌপান সমূহ পার হয়ে সিদ্বি লাভের পর তিনি হযরত কেবলা (কঃ) এর অন্যতম ‘খলিফা’ হিসেবে পরিনত হন এবং ‘জনাব’ উপাধি পান। খেলাফত প্রাপ্তির পর জনাব কাজী আছাদআলী কেবলা (রহঃ) আহলা দরবার শরীফে অবস্থান নিয়ে সুফীতত্তের চর্চা ও ইসলাম ধর্ম প্রচারে নিয়োজিত হন এবং হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলমানকে দীক্ষা দান করেন। মানুষকে খোদাপ্রেমের শিক্ষাদান ও ত্বরীকত প্রচারের দায়িত্ব সুচারুরূপে সম্পন্ন করে “জনাব কাজী আছাদআলী কেবলা (রহঃ)” ১৩৩৬ হিজরী ১৯১৫ইং ১লা শাবান বেছালপ্রাপ্ত হন। জাহেরী জীবদ্দশায় একবার জযবা হালতে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেন যে, তাঁরএকজন কৃষ্ণবর্ণের পূত্রসন্তান জন্মগ্রহন করবেন। এই কৃষ্ণবর্ণের পূত্রসন্তাই হচ্ছেন হাযতে রওয়া, মুশকিল কূশা, সুলতানুলমোনাজেরীন, ইমামে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত “হযরতুল আল্লামা শাহ্সূফী আবুল মোকারেম মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম সাহেব কেবলা (রহঃ)” প্রকাশ (নূরী বাবা)। হযরত নূরী বাবা (রহঃ)শিক্ষাজীবন শেষে দেশে ফিরে আসেন এবং সাধককূল শিরমনি “মাওলানা সৈয়দ গোলামুর রহমান আল-ক্বাদেরী (কঃ)” এর আধ্যাত্নিক শিষ্যত্ব লাভ করেন।হযরত নূরী বাবা (রহঃ) তাঁর সারা জাহেরী জীবনে ভ্রান্তও বাতিলপন্থীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মোনাজেরা বা সম্মুখ বিতর্কে অবতীর্ণ হন এবং শরীয়তের সংশ্লিষ্ট দলিলাদির মাধ্যমে বক্তব্য উপস্থাপনার সাবলিলতায় সহজেই প্রতিপক্ষকে পরাভূত করে ইসলামের সঠিক পথে শামিল করেন। হযরত বাবা ভান্ডারী (কঃ) এর সুযোগ্য খলিফা এবং জনাব কাজী আছাদআলী কেবলা (রহঃ) এর বংশের অন্যতম আধ্যাত্নিক পুরুষ বিশিষ্ট মোনাজের ওত্বরিকত প্রচারক “হযরতুলআল্লামা শাহ্সূফী আবুল মোকারেম মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম আল-ক্বাদেরী আল-চিশতী সাহেব কেবলা (রহঃ)”১৯৭৬ইং ১৪ডিসেম্বর,২৮শে অগ্রহায়ন তারিখে ভোর ৬টা ২২মিনিটে বেছালপ্রাপ্ত হন।

আগামী ১২ ও ১৩ ডিসেম্বর ২০২২ ইংরেজি সোমবার ও মঙ্গলবার আহলা দরবার শরীফের অন্যতম প্রাণপুরুষ সুলতানুল মোনাজেরীন, অলিয়ে কামেল হযরত শাহসূফী সৈয়দ নূরুল ইসলাম নুরী বাবা আল কাদেরী আল চিশতি (রহঃ) এর পবিত্র ৪৬ তম ওরছ শরীফ অনুষ্ঠিত হবে। এই ওরছ শরীফে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের পদচারণায় আল্লাহু আল্লাহ শব্দে মুখরিত থাকে দরবার প্রাঙ্গণ। এই মহান হাস্তির নজরে করম আমাদের উপর বর্ষিত হোক। অগনিত শ্রদ্ধা ও সালাম জানাই এই দরবার ও মহান হাস্তীগনের নিকট।

লেখকঃ মাঈন উদ্দীন রুবেল
সূত্রঃ আহলা দরবার শরীফ ফেসবুক ফেইজ ও গুগল

ট্যাগ :