এম.এইচ মুরাদ:
হযরত আল্লামা শাহ আহমদ শফী চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার পাখিয়ারটিলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন ইসলামীক ব্যক্তিত্ব ও চিন্তাবিদ, শাইখুল হাদীস, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত আমির ছিলেন।
একইসঙ্গে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান। দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামের হাটহাজারীর মহাপরিচালকও ছিলেন। তিনি আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম ও ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দ মাদরাসায় শিক্ষালাভ করেন। আল্লামা শফী আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলামে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন।
২০১০ সালে হেফাজতে ইসলাম নামে প্রতিষ্ঠা করেন একটি ধর্মীয় সংগঠন। বাংলায় ১৩টি ও উর্দুতে নয়টি বইয়ের রচয়িতা তিনি।
কওমী আলেমদের কাছে খুব শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন তিনি। তবে নারীবিরোধী নানা বক্তব্যের জন্য বিভিন্ন সময় হয়েছেন সমালোচিত ও আলোচিত। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ২০১৩ সালে গণজাগরণ আন্দোলন শুরুর পর হেফাজতে ইসলামের নেতৃত্বে তিনি বেশি আলোচনায় আসেন।
২০১৭ সালে তার সঙ্গে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের পর কওমির সনদের স্বীকৃতি এবং সুপ্রিম কোর্ট থেকে ভাস্কর্য অপসারণের ঘোষণা দেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক হিসেবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন আল্লামা আহমদ শফী, সবার কাছে তিনি ‘বড় হুজুর’ নামে পরিচিত।
বেশ কিছুদিন আগে থেকে দেশের শীর্ষ কওমী আলেম আল্লামা আহমদ শফীর শরীরের বাসা বাঁধে নানা রোগ। ১০৪ বছর বয়সী এ প্রবীণ আলেম ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। ফলে প্রায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। গত কয়েক মাসে শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিলে একাধিকবার চট্টগ্রাম ও ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয় বড় হুজুর আল্লামা শফীকে।
হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে চট্টগ্রাম হাসপাতালে নেয়াও হয়।
সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের আইসিইউতে থাকা আল্লামা শফীকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে শুক্রবার সন্ধ্যার আগে ঢাকায় এনে আজগর আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানেই জীবনের শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।