স্টাফ রিপোর্টারঃ
সরস্বতী পূজা, বাণী অর্চনার আরাধ্য দিন আজ। হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব। শুক্লা পঞ্চমীতে বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) শেত-শুভ্র কল্যাণময়ী বিদ্যাদেবীর আবাহন হবে। মা সরস্বতী জ্ঞানদায়িনী বিদ্যাদেবী সরস্বতী শ্বেত-শুভ্র বসনা। তার এক হাতে বীণা অন্য হাতে বেদপুস্তক। অর্থাৎ বীণাপানিতে যার তিনি বীণাপানি-সরস্বতী। আর এ থেকেই বাণী অর্চনার প্রচলন।
বিদ্যাদেবীর কৃপালাভের আশায় রাজধানীসহ সারাদেশে সকালে সরস্বতী পূজা উদযাপিত হচ্ছে। অজ্ঞতার অন্ধকার দূর করতে কল্যাণময়ী দেবীর পাদপদ্মে প্রণতি জানাবেন পুণ্যার্থীরা।
সরস্বতী বিদ্যার ও ললিতকলার অধিষ্ঠাত্রী দেবী হিসেবে পূজিত হন। ঐশ্বর্যদায়িনী, বুদ্ধিদায়িনী, জ্ঞানদায়িনী, সিদ্ধিদায়িনী, মোক্ষদায়িনী এবং শক্তির আঁধার হিসেবে সরস্বতী দেবীর আরাধনা করা হয়।
ধর্মীয় বিধান অনুসারে, মাঘ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী তিথিতে সাদা রাজহাঁসে চড়ে বিদ্যা ও জ্ঞানদাত্রী দেবী সরস্বতী পৃথিবীতে আসেন। অফিস-আদালত, পাড়া-মহল্লায় আজ পূজাম-পে পুণ্যার্থীরা মায়ের পাদপদ্মে অঞ্জলি দেবেন। দেবীর সামনে ‘হাতেখড়ি’ দিয়ে শিশুদের বিদ্যাচর্চার সূচনা হবে অনেক স্থানে। এ ছাড়া কিছু মণ্ডপে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
করোনা মহামারির কারণে গত তিন বছর অনাড়ম্বর সীমিত পরিসরে পূজা হলেও সংক্রমণ কমে যাওয়ায় এবার আড়ম্বরপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে সরস্বতী পূজা।
সনাতন ধর্মানুসারে সরস্বতী দেবী বিদ্যা ও জ্ঞানের দেবী বলে বৃহস্পতিবার দেশের অধিকাংশ স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিদ্যার্থীদের বাড়িতে বাড়িতে, মণ্ডপ-মন্দিরে ভক্তিভরে অনুষ্ঠিত সরস্বতী পূজা। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মেতে উঠবেন সরস্বতী পূজার আনন্দে। প্রতিবছরের মতো এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলে সরস্বতীর পূজার মহা আয়োজন চলছে। চারুকলা বিভাগ এবারও হলের পুকুরে মাঝখানে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান মণ্ডপ গড়ে তুলেছে।
এদিকে পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলাদা বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি তার বাণীতে বলেন, দেশে বিদ্যমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুমহান ঐতিহ্য আরও সুদৃঢ় করতে সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।
বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেবী সরস্বতী সত্য, ন্যায় ও জ্ঞানালোকের প্রতীক। বিদ্যা, বাণী ও সুরের অধিষ্ঠাত্রী। তিনি দেবী সরস্বতীর পূজার্চনা উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবাইকে জ্ঞানার্জনে ব্রতী হয়ে দেশের অগ্রযাত্রায় আত্মনিয়োগের আহ্বান জানান।
এদিন সকাল পৌনে ৯টায় পূজার্চনা এবং ১০টায় অঞ্জলি দেওয়া শুরু হবে। এ ছাড়া সন্ধ্যা আরতি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করে থাকে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ মন্দির ও বাসাবাড়িতে।