মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

করোনা পরিস্থিতির কারণে পিছিয়ে পড়া লাখো চাকরি প্রত্যাশীর প্রাণের দাবী বয়সসীমা ৩২ করা


প্রকাশের সময় :২৬ জুন, ২০২১ ৭:১৭ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী ব্রিটিশ-ভারত আমলে সরকারি অর্থাৎ ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস (আইসিএস) এবং সিভিল সার্ভিস অব পাকিস্তান (সিএসপি) ছিল ক্যারিয়ার গড়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় ক্ষেত্র। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের চাকরির বাজারে প্রথম স্থান দখল করে নেয় আন্তর্জাতিক সংস্থার চাকরিগুলো।

বেসরকারি অর্থাৎ করপোরেট দুনিয়ার চাকরিগুলো দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে নেয়, আর সরকারি চাকরিগুলো তৃতীয় অবস্থানে চলে আসে। বর্তমানে সরকারি চাকরির সুযোগ-সুবিধা, সামাজিক নিরাপত্তা, পেশাগত উত্কর্ষতার কারণে এটি তত্কালীন ব্রিটিশ-ভারত আমলের সিভিল সার্ভিসের মতো প্রথম অবস্থানে চলে আসে।

সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমার ইতিহাসের দিকে অবলোকন করলে দেখা যায়, স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী সময়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সর্বোচ্চ বয়স ছিল ২৫ বছর; স্বাধীন বাংলাদেশের শুরুর দিক থেকেই চাকরিতে প্রবেশের এই বয়সসীমা ২৭ বছরে উন্নীত করা হয়। আশির দশকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সেশনজটের ফলে শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ স্নাতক, বিশেষত স্নাতকোত্তর শিক্ষা ২৭ বছর বয়সের মধ্যে শেষ করতে পারছিলেন না।

১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত ১৫ বছরাধিক সামরিক-আধাসামরিক শাসনের পর দেশে সংসদীয় গণতন্ত্রের প্রত্যাবর্তনে নতুন গণতান্ত্রিক সরকার বিষয়টি অনুধাবন করে, ১৯৯১ সালে ১৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আগে চাকরিতে প্রবেশের বয়স তিন বছর বাড়িয়ে ৩০ বছরে উন্নীত করে। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় কত হওয়া উচিত?

অনেকেই মনে করছেন, বর্তমান সরকারি চাকরি প্রত্যাশীর বয়সসীমা ৩০ বছর থেকে অন্তত দুই বছর বাড়িয়ে ৩২ বছর করা অতি প্রয়োজনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইদানীং দেখা যাচ্ছো—যারা একাডেমিক রেজাল্ট ভালো করেন, তারা স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়াকালীন সময়ে বিসিএস ও অন্যান্য সরকারি/আধাসরকারির চাকরির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন। দেশে পর্যাপ্ত একাডেমিক জব না থাকায় এবং সরকারি চাকরিতে অতিমাত্রায় প্রতিযোগিতার কারণে অনেক মেধাবীর স্বপ্ন-ইচ্ছা-প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও বয়সের কারণে কাঙ্ক্ষিত ‘সোনার হরিণ’ অধরাই থেকে যাচ্ছে।

দেশের শ্রমবাজারে প্রতি বছর ২০-২২ লাখ তরুণ যুক্ত হচ্ছেন। সরকারি ও বেসরকারি খাত, ব্যক্তি মালিকানাধীন খাত, উদ্যোক্তা, উন্নয়ন এবং বিদেশে শ্রমবাজার মিলিয়ে প্রায় ১০-১১ লাখের মতো নতুন কর্মসংস্থান সম্ভব হয়। বাকি ৯-১০ লাখ তরুণ থেকে যায় কর্মহীন। এ বিশাল জনগোষ্ঠীকে কর্মে যুক্ত করার বাস্তবসম্মত মহাপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন করা জরুরি। এছাড়াও অনেকের মতে চাকরি প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর উল্লেখযোগ্য কারণ হচ্ছে :

১) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়সহ শুধু পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকেই লাখ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছেন, কিন্তু কর্মসংস্থানের অভাবে প্রতি বছর অগণিত বাড়ছে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা।

২) উচ্চশিক্ষার পাঠ্যসূচির সঙ্গে বিসিএসসহ চাকরির পরীক্ষা-কোর্সের বিস্তর পার্থক্য থাকায় তাদের আবার নতুন করে চাকরির পড়াশোনা করতে হয়; ৩) বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে শিক্ষার্থীরা এখন ঘরবন্দি, প্রায় দেড় বছর ধরে কোনো চাকরির আবেদনও করতে পারছেন না; পরিণামে বেকারদের অনেকের মনোবল ভেঙে গেছে। হতাশায় ভুগছেন অনাগত ভবিষ্যতের কথা ভেবে। গত বছরের মার্চ মাস থেকে প্রায় সব চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ বন্ধ করে দেওয়া হয়। করোনা দুর্যোগের মধ্যে চাকরিপ্রত্যাশীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে যাদের চাকরির বয়সসীমা ত্রিশোর্ধ্ব তাদের জন্য পাঁচ মাস ছাড়ের সরকারি সিদ্ধান্ত শুধু যৌক্তিকই নয়, আশাপ্রদ ছিল।

কিন্তু এর মাধ্যমে করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে প্রায় দেড় বছর সরকারি চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না হওয়ায় ত্রিশোর্ধ্ব হাজারো চাকরি প্রত্যাশীর বর্ধিত সময়ে চাকরির আবেদনের সুযোগই তৈরি হবে না। বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলমান, যার কারণে অনিশ্চিত এক গন্তব্যের দিকে চাকরি প্রার্থীদের ভবিৎষ্যত।

যেহেতু বর্তমানে দেশে প্রতি বছর লাখ লাখ গ্র্যাজুয়েট স্টুডেন্ট বের হচ্ছেন, ফলে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থানে অভাবে দেশে বেকারত্বের হারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে সরকারকে অবশ্যই নজর দিতে হবে। সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টা, উদ্যোক্তা হওয়ার মানসিকতার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সংকট মোকাবিলা করতে হবে। সর্বোপরি, সরকার সব দিক বিবেচনায় অতিসত্বর সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স অন্তত ৩২ বছরে উন্নীত করে শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে সৃষ্ট হতাশা ও অবিচারের ধারণা দূর করবে এটিই আপামর সবার প্রত্যশা।

ট্যাগ :