স্টার রিপোর্টার:
ব্যাংক খাতে সুদহার এক অঙ্কে (সিঙ্গেল ডিজিট) নামিয়ে আনাসহ খেলাপি ঋণ কমাতে কমিটি গঠন করা হচ্ছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে এই কমিটি সিদ্ধান্ত জানাবে। সে অনুযায়ী আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সুদহার হ্রাস এবং খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার কার্যক্রম শুরু হবে।
রবিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে ব্যাংক মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এসব কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বেকারত্ব দিন দিন বাড়ছে। এই বেকারত্ব কমাতে হলে উৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগের কোনও বিকল্প নেই। উৎপাদনশীল খাতকে বাঁচাতে ব্যাংক ঋণের সুদহার এক অঙ্কে নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখনও সুদহার এক অঙ্কে নামেনি কেন এবং খেলাপি ঋণ দিন দিন কী কারণে বাড়ছে, সেটা তদারকির জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে কমিটি সিদ্ধান্ত জানাবে। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী ১ জানুয়ারি থেকে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির জানান, এই কমিটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন ডেপুটি গভর্নর, সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হবে। কমিটির সদস্য সংখ্যা সাত হতে পারে বলে জানান তিনি।
দেশের খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে স্বীকার করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ পুনঃতফসিলের সুবিধা দেওয়ার কারণে নিয়মিত গ্রাহকরাও এখন খেলাপি হয়ে গেছে। সে কারণেই খেলাপি ঋণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ অবশ্যই কমবে বলে দাবি করেন অর্থমন্ত্রী।
মুস্তফা কামাল এ-ও স্বীকার করেন, খেলাপি ঋণ কমাতে শুরু থেকে তারা শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে পারেননি। এ কারণেই সুদহার বৃদ্ধি পেয়েছে। সুদহার বৃদ্ধি পেলে একটি দেশের উৎপাদনশীল খাত, শিল্প খাত উন্নত হতে পারে না। এই মুহূর্তে যেকোনোভাবে এই খাতকে এগিয়ে নিয়ে আসার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অর্থঋণ আদালতে আটকে থাকা মামলাগুলো ব্যাংকের সুদহার কমিয়ে আনতে বাধা হিসেবে কাজ করেছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর জিডিপি কমলেও আমাদের দেশের জিডিপি কমার কোনও ভয় নেই। কারণ, আমাদের দেশের উৎপাদিত পণ্যের চাহিদা কখনও কমবে না, বরং বাড়বে।
অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে খেলাপি ঋণ বিক্রির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে খেলাপি ঋণ বিক্রিসহ কয়েকটি প্রক্রিয়া বিবেচনাধীন রয়েছে। যেগুলো ক্যাবিনেটে আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির কাছে খেলাপি ঋণ বিক্রির বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।