অনলাইন ডেস্ক:
মাছটির নাম অরফিশ। মাছ হলেও এটি দেখতে অনেকটা সাপের মতো। গভীর সমুদ্রে, যেখানে সূর্যের আলো পর্যন্ত পৌঁছায় না—এমন অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে এটি বসবাস করে। তাই সহজে এর দেখা পাওয়া যায় না। দৈর্ঘ্যে এই মাছ ৩০ ফুটও হতে পারে। বিপুল আকৃতির জন্য অনেকে এই মাছকে ‘দানব’ হিসেবে আখ্যা দিলেও ‘ডোমস ডে ফিশ’ বা কেয়ামতের মাছ হিসেবেও এটির বিশেষ খ্যাতি রয়েছে। ১ জানুয়ারি জাপানে হওয়া ভূমিকম্পের সঙ্গেও মাছটির সম্পর্ক দেখছেন কেউ কেউ।
দ্য ইনডিপেনডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তাইওয়ান উপকূলে একটি অরফিশ গভীর জল থেকে ওপরের দিকে উঠে এলে এটি ডুবুরিদের নজরে পড়ে। জাপানের ভূমিকম্পের জন্য এটিকে একটি পূর্বসংকেত হিসেবে চিহ্নিত করছেন অনেকে। ৭.৬ মাত্রার শক্তিশালী এই ভূমিকম্পে দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৪৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পের পর সুনামির আশঙ্কায় সারা দেশের কয়েক লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এবারের ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে জাপানের প্রধান অংশ হনশু দ্বীপ। ভূমিকম্পের জেরে এই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে প্রায় ১২ ফুট উঁচু একটি ঢেউ আছড়ে পড়ে বলে জানা গেছে। দেশটির ইতিহাসে এবারের ভূমিকম্পকে অন্যতম বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
জাপানি বিশ্বাস অনুযায়ী, এত বড় দুর্যোগ কোনো সংকেত ছাড়াই চলে আসেনি। তাই গত গ্রীষ্মে দেখা পাওয়া সেই অরফিশকেই টেনে আনা হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে টুইটারে এ বিষয়ে অনেকে নিজেদের মতামত দিচ্ছেন। এসব টুইট থেকে জানা গেছে, ২০১১ সালে জাপানে ভূমিকম্পের জেরে যে প্রলয়ংকরী সুনামির সৃষ্টি হয়েছিল, তার আগের বছরটিতে ডজনখানেক অরফিশ সমুদ্রের তীরে ভেসে এসেছিল।
জাপানিরা অরফিশকে ‘রিউগো নো সুকাই’ নামে ডাকে। এই নামের অর্থ হলো, সমুদ্র দেবতার প্রাসাদ থেকে বার্তা। তবে সমুদ্রের গভীর থেকে অরফিশ ভেসে আসার সঙ্গে ভূমিকম্পের সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে এখন পর্যন্ত বৈজ্ঞানিক কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।