স্টাফ রিপোর্টার:
মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে দুই ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ এপ্রিল মাসে বাংলাদেশের অবস্থান ১১০তম। এর আগের মাস অর্থাৎ, মার্চে তালিকায় দেশের অবস্থান ছিল ১১২তম। একই সময়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতিতেও দুই ধাপ এগিয়ে ১০৮তম থেকে ১০৬তম অবস্থানে উঠে এসেছে বাংলাদেশ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইন্টারনেটের গতি কেমন, তা তুলে ধরে প্রতি মাসে স্পিডটেস্ট গ্লোবাল ইনডেক্স নামে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ওকলা। প্রতিষ্ঠানটির সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ওকলার তথ্যানুযায়ী—এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেটে গড় ডাউনলোড স্পিড ছিল ২৩ দশমিক ৮৩ এমবিপিএস। আর আপলোড স্পিড ছিল ১০ দশমিক ৮০ এমবিপিএস। এসময়ে দেশে মেডিয়ান ল্যাটেনসি ছিল ২৬ মিলিসেকেন্ড।
এর আগে মার্চে মোবাইল ইন্টারনেটের মানের সূচকে গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে অবনতি হয়। ওই মাসে অবস্থান ঠেকে ১১২-তে। এর আগে গত বছরের অর্থাৎ, ২০২৩ সালের অক্টোবরে ১১১তম অবস্থানে নেমে যায় বাংলাদেশ। এর পরের মাসেই অবস্থান উন্নতি হয়। ৬ ধাপ এগিয়ে নভেম্বরে ১০৫তম স্থানে উঠে আসে বাংলাদেশ।
ডিসেম্বর আরও ৪ ধাপ এগিয়ে ১০১তম অবস্থানে উঠে এলেও চলতি বছরের প্রথম মাস অর্থাৎ, জানুয়ারিতে ফের ১০৮তম অবস্থানে নেমে যায়। এরপর ফেব্রুয়ারিতে ১০৬তম অবস্থানে উঠে আবারও মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে পেছনের দিকে হাঁটতে শুরু করে। টানা অবনতির পর অবশেষে এপ্রিলে দুই ধাপ উন্নতি করেছে বাংলাদেশ।
এদিকে, একই সময়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে ডাউনলোডের গতি ছিল ৪৬ দশমিক ৫২ এমবিপিএস। আপলোড গতি ছিল ৪৫ দশমিক ৩১ এমবিপিএস। আর মেডিয়ান ল্যাটেনসি ছিল ৫ মিলিসেকেন্ড।
মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে যেমন উত্থান-পতন হয়েছে, সেই তুলনায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতির র্যাংকিংয়ে কিছুটা স্থিতিশীল বাংলাদেশ। ২০২৩ সালের অক্টোবরে ১০৮তম, নভেম্বরে ১০৭তম, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে ১০৮তম, ফেব্রুয়ারিতে ১০৭তম অবস্থান ছিল বাংলাদেশের। মার্চে এক ধাপ পিছিয়ে ১০৮তম অবস্থানে নেমে গেলেও এপ্রিলে দুই ধাপ এগিয়ে ১০৬তম অবস্থানে উঠে এসেছে।
ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক নিয়ে কিছু কাজ করলে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের গতি আরও বাড়িয়ে র্যাংকিংয়ে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব বলে মনে করেন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক।
তিনি বলেন, গতি বাড়ানো বলেন; আর র্যাংকিংয়ে উন্নতির কথা বলেন, এটা এগিয়ে নিতে ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক নিয়ে কিছু কাজ করতে হবে। শহরভিত্তিক ব্যান্ডউইথগুলো থেকে কিন্তু আমরা গ্রাহকের চাহিদামতো এমবিপিএস গতি দিতে পারছি। কেউ যদি ১০ এমবিপিএসের জায়গায় ২০ এমবিপিএসও চান, তবুও দেওয়া সম্ভব। সামান্য দাম বাড়িয়ে এটা দেওয়া সম্ভব হয়। এটা ঢাকার বাইরের গ্রাহকদের দিতে গেলে খরচটা বেড়ে যায়। সেটা নিয়ে এখন কাজ করা উচিত।
মোবাইল ইন্টারনেটের গতির সূচক নিয়ে গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলালিংকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এ নিয়ে তারা মন্তব্য করতে রাজি হননি। রবির একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে বলেন, ‘নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও গতি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এখানে বিটিআরসি ও সরকারের যে সহযোগিতা প্রয়োজন, তা সবসময় পাওয়া যায় না।’
বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগের পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাক বলেন, ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। সরকারের দায়িত্বশীলদের নির্দেশনায় কাজ করছি। ওকলার ইনডেক্স আমরা দেখে থাকি। সেখানে অনেক বিষয় বা ইনডিকেটর থাকে। সম্প্রতি ইনডেক্স খেয়াল করা হয়নি। সেটা দেখার আগে আমরা কতটা এগিয়েছি বা পিছিয়েছি, তা নিয়ে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।