স্টাফ রিপোর্টারঃ
সুন্দরবনে ৪ বছর পর শুরু হচ্ছে বাঘ শুমারি। ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে এ গণনা চলবে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত। ৩ বছর মেয়াদি এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। বনের স্থল ভাগের ৪ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার এই জরিপের ফল জানা যাবে ২০২৫ সাল নাগাদ। বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়।
সুন্দরবনে গত ৭ বছরে হয়েছে দুইটি বাঘ শুমারি। ২০১৫ তে বাঘ ছিল ১০৬টি আর ২০১৮ তে মেলে ১১৪টি। তার মধ্যে পূর্ণ বয়স্ক ৬৩টি, ১৮টি ১২ থেকে ১৪ মাস বয়সী এবং ৩৩টি ছিল শাবক। সেবার সাতক্ষীরা, খুলনা ও শরণখোলা রেঞ্জের ৩ ব্লকের এক হাজার ৬৫৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় করা হয় ক্যামেরা ট্র্যাপিং।
এবারও চার হাজার বর্গ কিলোমিটারে শুমারি হবে একই পদ্ধতিতে। আর প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইট কলার যুক্ত হবে দুটি বাঘের। প্রায় ৩৬ কোটি টাকার এ প্রকল্পে বাঘ গণনার ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা।
বাঘ রক্ষায় ২০১০ সালে রাশিয়ায় বৈঠক করেন ১৩ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। তাতে ২০২২ সালের মধ্যে বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার অঙ্গীকার করেন তারা। তবে ২০১৩ থেকে এ পর্যন্ত সুন্দবনে মিলেছে ১২টি বাঘের মরদেহ। তবে সম্প্রতি বনের পূর্বাশেং ৭টি বাঘের দেখা মিলেছ। শেখের টেক ও নীলকমলে দেখা গেছে বাঘের ছানার পায়ের ছাপ।
এবছর আবারো রাশিয়ায় হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাঘ সম্মেলন। সেখানে পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাঘ বৃদ্ধির তথ্য দিতে পারছে না বাংলাদেশ। কারণ এবারের শুমারি ফল ২০২৫ সালের আগে পাওয়া যাবে না। এবারের শুমারির আওতায় থাকছে বাঘের খাবারের বিষয়টিও। পাশাপাশি আরো শক্তিশালী হচ্ছে টাইগার রেসপন্স টিম।
এর আগে গত ২৩ মার্চ প্রকল্পটির প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। ‘সুন্দরবন বাঘ সংরক্ষণ প্রকল্প’র আওতায় এতে গণনা করা হবে বাঘের খাদ্য হিসেবে বিবেচিত বনে থাকা হরিণ ও শূকরের সংখ্যাও। প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনে বাঘ স্থানান্তর, অন্তত দুটি বাঘে স্যাটেলাইট কলার স্থাপন ও মনিটরিং করা, বাঘের পরজীবীর সংক্রমণ ও অন্যান্য ব্যাধি এবং মাত্রা নির্ণয়, উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ করা হবে।
সুন্দরবনে ২০০৭ সালে ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ সালে আইলা ও ২০২১ সালে ইয়াসের মতো বড় বড় ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বনের সমস্ত এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। তখন বনের বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণি আশ্রয়ের জন্য লোকালয়ে প্রবেশ করে। বাঘ ও বাঘের শিকার প্রাণি ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়ের জন্য সুন্দরবনে ১২টি মাটির কিল্লা স্থাপন করা হবে এ প্রকল্পের মাধ্যমে।