স্টাফ রিপোর্টার:
১৪ ডিসেম্বর ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’। প্রতিবছর এ দিনটিকে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ই ডিসেম্বর থেকে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়কালের মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এদেশের প্রায় সকল প্রথম শ্রেণীর বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করে। এ কাজে পাকিস্তানি সেনাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করেছিল রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনীর সদস্যরা।
১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী মিলে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার নিমিত্তে অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। অনেকের দেহে আঘাতের চিহ্ন, চোখ, হাত-পা বাঁধা, কারও কারও শরীরে একাধিক গুলির চিহ্ন দেখা যায়। অনেককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ঢাকার মিরপুর, রায়ের বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গণকবরে তাঁদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। ১৬ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনের পর নিকটাত্মীয়রা মিরপুর ও রাজারবাগ বধ্যভূমিতে স্বজনদের মৃতদেহ শনাক্ত করেন।
১৯৭১ সালে বছরব্যাপী পাকিস্তান সেনাবাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে। পরিকল্পিতভাবে সবচেয়ে বেশীসংখ্যক বুদ্ধিজীবীকে হত্যা করা হয়েছিল ১৪ ডিসেম্বরে। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বোরচিত এ হত্যাকান্ডকে স্বরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এই দিনটিকে ‘শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ ঘোষণা করেন।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে নিহত বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে ঢাকার মিরপুরে প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নির্মান করেন স্থপতি মোস্তফা হালি কুদ্দুস।
পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে ঢাকার রায়েরবাজারে শহিদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ নামে জামী-আল সাফী ও ফরিদউদ্দিন আহমেদের নকশা করা আরেকটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ কাজ শুরু হয়, যা ১৯৯৯ সালের ১৪ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করেন।
শহিদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ একটি স্মারক ডাকটিকিটের ধারাবাহিক প্রকাশ করেছে।